English

23 C
Dhaka
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

ঢামেকে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ

- Advertisements -

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু ঘিরে চিকিৎসককে মারধর ও হট্টগোলের ঘটনায় কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই হাসপাতালটিতে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।

সূত্র জানায়, শনিবার এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক চিকিৎসককে মারধর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রাতে আবারও হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের হুমকি দেওয়া হয়। শনিবার রাত ১২টার পরে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে এ হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। হাসপাতালের একাধিক সূত্র এ তথ্য জানায়।

হাসপাতাল সূত্র আরও জানা যায়, জরুরি বিভাগে বিষপানে অসুস্থ হয়ে আসা এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকদের হুমকি এবং ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ঢুকে কম্পিউটার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপরে হত্যার উদ্দেশে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের হুমকি দেওয়া হয়।

এছাড়া রাতেই খিলগাঁও থেকে আহত হয়ে এক যুবক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। সেই আহত যুবককে কেন্দ্র করে হাসপাতালে আসা দুই গ্রুপের মারামারি ও একে অপরকে কোপানোর ঘটনা ঘটে। এ কারণে জরুরি বিভাগে রাতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হাসপাতাল গিয়ে কয়েকজনকে আটক করে।

এদিকে হাসপাতালের অপর এক সূত্র জানায়, শনিবার এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অবহেলার অভিযোগ তুলে চিকিৎসককে মারধর করার কারণে চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। পরে তারা ২৪ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দেন দোষীদের গ্রেপ্তারের।

এর রেশ কাটতে না কাটতে রাতেই আবারও জরুরি বিভাগে হামলা ঘটনা ঘটে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। পরে তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর তিনবার হামলা হওয়ার কারণে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রাতেই ধর্মঘট শুরু করে এবং রোববার সকাল থেকে সব চিকিৎসকরা একযোগে কর্মবিরতি শুরু করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসারের কক্ষে তালা ঝুলানো পাশাপাশি টিকিট কাউন্টার গেটও তালাবদ্ধ। মূলত রোগীরা হাসপাতালে এসেই নিয়ম অনুযায়ী টিকিট কেটে মেডিকেল অফিসারের রুমে যান। সেই কক্ষ দুটোও বর্তমানে তালাবদ্ধ।

ফলে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগসহ সব ওয়ার্ডের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে হাসপাতালের রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সকালে চিকিৎসকরা কাজে যোগ দিলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান তারা। সর্বশেষ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসাররা তাদের কক্ষ বন্ধ করে দেন। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয় জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার। এরপর থেকেই ঢাকা মেডিকেলের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে রোগীদের। চিকিৎসক না পেয়ে হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটে যেতে দেখা গেছে অধিকাংশ রোগীকে।

নরসিংদী থেকে আহত সুমন নামে এক রোগীকে হাসপাতাল নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। তবে হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসক না পেয়ে তারা অ্যাম্বুলেন্স করে অন্য হাসপাতালের উদ্দেশে রওয়ানা হন।

সুমনের ভাই মো. কবির হোসেন বলেন, সকালেই নরসিংদী হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় আমাদের রোগীকে। এখানে আসার পর দেখি জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার বন্ধ। ডাক্তারদের রুমও সব বন্ধ করে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এজন্য ছোট ভাইকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছি। সেখানেও চিকিৎসক আছেন কিনা জানি না।

সিয়াম নামে দুই বছরের শিশুকে নিয়ে আসেন তার বাবা-মা। জরুরি বিভাগের সামনে তাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা যায়। শিশুটির মা বলেন, সিয়ামের প্রচণ্ড জ্বর। এজন্য সকালে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তবে এখনো চিকিৎসক দেখাতে পারিনি। কখন দেখাতে পারবো তাও জানি না।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) বাচ্চু মিয়া শনিবার রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হট্টগোলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন