গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের এপিসি কারে (অস্ত্রসজ্জিত যানবাহন) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক পুলিশের কবজি উড়ে যাওয়াসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদেরকে উদ্ধার করে গাজীপুর ও ঢাকার দুটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে আরও ৩ পুলিশ সদস্য আহত হন।
আজ বুধবার বিকেলে এপিসি কারের ভেতরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- প্রবীর (৩০), ফুয়াদ (২৮), খোরশেদ (৩০), আশিকুল (২৭) ও বিপুল (২৪)।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, আহতবস্থায় ৫ জন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত পুলিশ সদস্য প্রবীর (৩০), ফুয়াদ (২৮) ও খোরশেদকে (৩০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আশিকুল (২৭) ও বিপুলকে (২৪) হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এপিসি কারের ভেতর পুলিশ সদস্যরা ছিলেন। তাদের অসাবধানতায় এপিসি কারের ভেতর বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণ ঘটেছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, বুধবার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মোট ৮ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এর মধ্যে সকালে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জন ও বিকেলে নাওজোড় এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ জন আহত হয়েছে। বিকেলে যে ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, তারা শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ ও এপিসি কারে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হয়েছেন। সন্ধ্যার দিকে শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে গেছেন, পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পোশাক কারখানার শ্রমিকদের নূন্যতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, সফিপুর ও মৌচাকসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার সকালে আন্দোলন করে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় এক নারী শ্রমিক নিহত হন। এরপর পরিস্থিতি পুরোই স্বাভাবিক ছিল। দুপুরের পর কোনাবাড়ি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় শ্রমিকদের।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকায় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, র্যাবের সমন্বয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করে তারা।