সাভারের আশুলিয়ায় একটি কারখানার ভেতর থেকে সাইফুর রহমান (৩৩) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ওই কারখানায় মহাব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
শনিবার (১৯ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়ার বটতলা এলাকার আব্দুল হাসনাতের মালিকানাধীন বাগদাদ প্যাকেজিং কারখানার ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি ওই কারখানায় প্রায় চার বছর ধরে জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
নিহত সাইফুর রহমান লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার পূর্ব শেখেরপুড়া এলাকার মৃত বদিউর রহমানের ছেলে। আত্মহত্যার আগে তিনি একটি চিরকুট লিখে যান। তিনি প্রায় এক মাস আগে বিয়ে করে সংসারজীবন শুরু করেন।
চিরকুটে তিনি লেখেন, ‘আমার কারও ওপর কোনো মান-অভিমান, রাগ নেই। আল্লাহর জন্য আমি সবাইকে ভালবাসি। আমার এই লাশ আমার মায়ের কাছে পৌঁছিয়ে দিবেন বা দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন আল্লাহ আমার জীবনে করে যাওয়া কোনো কাজের জন্য উসিলা হিসাবে কবুল করে আমাকে মাফ করে দেন। রফিক দুলাভাই অনেক ভালো লোক। যখনই আমি কোনো সমস্যায় পড়তাম তখন রফিক ভাইয়ের কাছে গেলে আপন ভাইয়ের মত পাশে দাঁড়াতেন। বুকে আগলিয়ে রেখে পরামর্শ দিতেন। ভাই আপনি সাইমুনকে আপনার ছোট ভাইয়ের মত আগলিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন। ‘
চিরকুটে আরো লেখা ছিল, ‘সাইমুন তুমি রফিক ভাইকে বাবার মত সম্মান করবে। আমার জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন আমাকে মাফ করে দেন। খুব দ্রুত সংসার জীবন শুরু করবা। আমার জন্য দোয়া করবা আল্লাহ যেন আমাকে ক্ষমা করে দেন। ‘
পুলিশ জানায়, কারখানার নিরাপত্তাকর্মীর খবরের ভিত্তিতে ওই কারখানার একটি কক্ষের দরজা কেটে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি কারখানার সেই কক্ষে থাকতেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে পরিবারে কেউ কিছু ধারণা দিতে পারছে না। চিরকুটে লেখা সাইমুন তার আপন ছোট ভাই। এ ছাড়া শ্রমিকরা ও সহকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নিহত সাইফুর রহমান খুব শান্ত ও ভালো মানুষ ছিলেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘নিহত সাইফুর রহমানে আগের লেখার সঙ্গে চিরকুটের লেখা মিলিয়ে দেখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি এটার তারই হাতের লেখা। এদিকে মুঠেফোনে ঘটনার বিষয়ে কথা বলে স্ত্রীর কথাবার্তা একটু অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। তবে স্ত্রীসহ পরিবার অন্য সদস্যের বিষয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ‘