কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন- এসময় গুলিতে হামলায় মারা গেছেন শতশত সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে নিহত ২০ জনের মরদেহ এখনও পড়ে আছে ঢাকার দুটি হাসপাতালের তিনটি মর্গে।
এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আটটি, ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ৯টি এবং শেরে-বাংলা নগরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে তিনটি মরদেহ রয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের ৯টি মরদেহের দুটি উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল থেকে, তিনটি মরদেহ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল থেকে এসেছে। পুলিশ হাসপাতাল থেকে আসা তিনটি মরদেহ পুলিশের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
লাশগুলো বিকৃত হয়ে যাওয়ায় পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না, কেউ খোঁজ করতেও আসছে না। থানার কার্যক্রম বন্ধ থানায় করা যাচ্ছে না সুরতহাল। লাশগুলো পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
শাহবাগ থানা দায়িত্বপালনকারী কনস্টেবল সালাহ উদ্দিন আহমেদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, এখন পর্যন্ত আসা লাশের মধ্যে যাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে, সেগুলো তাদের স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ১৭টি লাশের বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
তিনি বলেন, থানার কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণেও কিছুটা সমস্যা হয়েছে। শনাক্ত না হওয়া মরদেহগুলো সৎকারের জন্য আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে দেওয়ার পক্ষে তিনি।
মরদেহগুলো নিয়ে বিপাকে আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষও। ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী গোলাম মোখলেসুর রহমান বলেন, আমাদের মরচুয়ারিতে জায়গা কম। ফলে এতগুলো মরদেহ এখানে দীর্ঘদিন রাখাও যাচ্ছে না। থানার কার্যক্রম শুরুর অপেক্ষায় আছি আমরা।
পুলিশ যদি সুরতহাল করে দেয়, তাহলে আমরা অটোপসি করে দেব। ডিএনএস স্যাম্পল রেখে সেগুলো আনজুমান মফিদুল ইসলামে দিয়ে দেব। আর পরে কেউ ক্লেইম করলে ডিএনএ টেস্ট করে তাদের স্বজনদের জানানো যাবে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক মো. শফিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ৫ অগাস্টের পর তিনটি মরদেহ এসেছে হাসপাতালে, যাদের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। সেগুলো মর্গে রাখা আছে।
কোটাবিরোধী আন্দোলন চলার সময় ১৮ জুলাইয়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে প্রায় তিনশ মানুষের মৃত্যুর খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে। এরপর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে ৪ ও ৫ অাগস্ট ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতা হয়।
সে সময় পুলিশের গুলিতে অনেকে মারা যায়। আন্দোলনকারীরা ঢাকার বিভিন্ন থানায় হামলা করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
কোটাবিরোধী আন্দোলন চলার মধ্যে গত ২৬ জুলাই পর্যন্ত ২১টি বেওয়ারিস লাশ দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম।