ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঢাকায় বেড়াতে আসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী। শনিবার বিকেল ৩টায় স্ত্রীকে নিয়ে রাজধানীর গোলাপশাহ মাজার রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এসময় এক ছিনতাইকারী তার স্ত্রীর গলার সোনার চেইন নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পল্টন থানায় অভিযোগ করেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন। অভিযোগ করা পর ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে রোববার বিকেলে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ফেসবুক লাইভে করেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, আমি এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছি গোলাপশাহ মাজারের, এর একদিকে সচিবালয়, একদিকে গুলিস্তান, একদিকে পুরান ঢাকা। জায়গাটি সবচেয়ে নিরাপদ অঞ্চল হওয়ার কথা ছিল। মাত্র ১০ গজ দূরে পুলিশ বক্স। সেখানে শনিবার আমি যখন স্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এক ছিনতাইকারী আমাদের আক্রমণ করে আমার স্ত্রীর গলার চেইন নিয়ে চলে যায়। পাশে পুলিশের গাড়িতে আমি সাহায্য চাইলেও পুলিশ আমাকে কোনো সাহায্য করেননি।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি যখন পুলিশের কাছে সাহায্য চাইলাম, পুলিশের একটি পিকআপ ছিল, অনেকগুলো পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। তারা আমাকে বলল, আপনার ছিনতাই কোন জায়গায় হয়েছে, স্পটটা দেখান। তাদের চোখের সামনে ছিনতাইকারী দৌড়ে চলে গেল, তারা ছিনতাইকারী ধরার বদলে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, কোন থানার অধীনে পড়েছে। পুলিশ বলছে- ওটা পল্টন থানায় হয়েছে, আমরা দেখতে পারি না। গোলাপশাহ মাজার একটা গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গলের মতো, সেটা ক্রাইম ট্রায়াঙ্গলে পরিণত হয়েছে। তিন অঞ্চলের পুলিশ তারা কেউ কাজ করছে না। একজন আরেকজনকে দোষ দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমার হাতে তো কোনো ক্ষমতা নেই। কাজেই আমি এখানে যখন পুলিশকে বললাম, একজন আমাকে বলছে- আপনি তো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আপনি গাড়িতে কেন চলাচল করেননি। আপনি কেন রিকশায় চলাচল করেছেন। আপনারা বলেন, আমরা কি গাড়িতে চলাচল করব? এ দেশের হাজার হাজার মানুষ রিকশা দিয়ে চলাচল করে। তাহলে তাদের নিরাপত্তা কে দেবে? আমার গাড়ি নেই, এ জন্য কি আমার নিরাপত্তা থাকবে না। এখানে পুলিশ যে দাঁড়িয়ে আছে, তার কাজ কী? পিকআপে পুলিশ ছিল, তার কাজ কী?’
অধ্যাপক আরও বলেন, এ নিয়ে পল্টন থানায় তিনি অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তারা কোনো যোগাযোগ করেনি। এই বাংলাদেশে নাগরিকদের সচেতনতা ছাড়া নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বলেন, শনিবার আমি যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, আমারা স্ত্রী ভয়ে কুঁকড়ে গেছেন। এখানে যে পরিমাণ গাড়ি চলাচল করে, ছিনতাইকারীর আক্রমণে পড়ে গিয়ে অন্য গাড়ির নিচে চাপা পড়ার আশঙ্কা ছিল। আমার সৌভাগ্য, আমারা স্ত্রী রিকশা থেকে পড়ে যায়নি।
এ বিষয়ে পল্টন থানার গুলিস্তান পুলিশ বক্সের ইনচার্জ উপপরিদর্শক ওবায়দুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ছিনতাই হয়েছে শাহবাগ ও পল্টন থানার সীমানায়। পরে শাহবাগ থানার পুলিশ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুনকে নিয়ে কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। পরে দেখা যায়, ঘটনাস্থল পল্টন থানার অধীনে। বিষয়টি জানার পর পুলিশের দুই-তিনটি দল কাজ করছে।