একই থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী করা হয়েছিলো পল্টন থানার সভাপতি মো. এনামুল হক আবুলকে। তার বিচার দাবিতে করা হয়েছিলো পোস্টারিংও। গত ১৬ আগস্ট মামলা দায়ের হলেও এতদিন চুপচাপ ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আবুল।
অবশেষে সংবাদ সম্মেলন করে জানালেন, জসীম উদ্দিনের ওপর কোনো হামলার ঘটনাই ঘটেনি। তিনি মদ্যপ অবস্থায় পল্টনের হোয়াইট হাউজে ভাঙচুর করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে গত ১৬ আগস্ট রাতে ‘হোয়াইট হাউজে’র ঘটনার ভিডিও ফুটেজও দেখানো হয়। দুই পর্বের ভিডিওতে অবশ্য জসীম উদ্দিনকে মারধরের দৃশ্য দেখা যায়নি।
যদিও ঘটনার দিন জসীম উদ্দিনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার স্বজনদের পক্ষ থেকে তখন অভিযোগ করা হয়, জসীম উদ্দিনকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। তাকে নীচে ফেলে পা দিয়ে আঘাত করায় হার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক আবুল বলেন, একটি বিতর্কিত মহল দীর্ঘদিন ধরে তাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও বিতর্কিত করার জন্য মিথ্যা মামলা ও অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। এরমধ্য দিয়ে তারা দলকে দুর্বল করতে চায়।
তিনি বলেন, জসিমউদ্দিনের মেয়ে শিবা আক্তার যুথী গণমাধ্যমে ও মামলার এজাহারে বলেছেন- আমি নাকি জসিমউদ্দিনকে মাটিতে ফেলে মারধর করেছি। তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। মারধরের কারণে নাকি উনি মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
অথচ তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় হোয়াইট হাউজ থেকে বের হোন। সাথে মোবাইলও ছিলো, যা সিসি ক্যামারায় স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। এজাহারে শিবা আক্তার যুথী নিজেকে পল্টন থানা মহিলা লীগের সভাপতি দাবি করলেও তিনি তা নন, যা মহিলা লীগের মহানগর সভাপতি আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছেন। এ কাগজও আমাদের কাছে আছে।
আমার পরিবার সম্পর্কে আপনারা সকলেই জানেন। আমার পিতা আব্দুর রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমার চাচাতো ভাই সাবেক সচিব সিরাজ উদ্দীন সাহেব জনতার মঞ্চে অংশগ্রহন করতে গিয়ে চাকরিচ্যুত হন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী ফ্লাইট সার্জেট ফজলুল হক আমার মামা। ১৯৬২ সালে আমার বাবা শিক্ষা কমিশনারের বিরূদ্ধে আন্দোলনে কারাবরণ করেছিলেন। আমার বড় ভাইও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ ৪০ থেকে ৪৫ বছর যাবৎ এই এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘদিন অত্র ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলাম। বর্তমানে পল্টন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ১৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এর দায়িত্ব পালন করছি। আমার জীবনে কোন রাজনৈতিক কর্মী বা এলাকার কোন বাসিন্দার সাথেও মনমালিন্য হয়নি। সেখানে আমার বিরুদ্ধে ১৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিমউদ্দিনকে মারধরের যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
কমিশনারের কাছে প্রশ্ন ছিলো- আহত সহকর্মীকে দেখতে গিয়েছিলেন কিনা? জবাবে তিনি বলেন, না আমি তাকে দেখতে যেতে পারিনি। কারণ তার লোকজন হাসপাতালে যে অবস্থার তৈরি করে রেখেছে তখন যাওয়ার মতো অবস্থা ছিলো না।
ওযার্ড সাধারণ সম্পাদক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন- এমন দাবির প্রেক্ষিতে পল্টন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির কাছে জানতে চাওয়া হয় জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন কিনা।
জবাবে তিনি বলেন, এটা মহানগর দেখবে। আমি লিখিতভাবে বিষয়টি মহানগের নেতাদের জানিয়েছি।
এসময় কাউন্সিলের পাশে থাকা একজন জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিএনপির লোকজনের সঙ্গে সখ্যতা রাখারও অভিযোগ তোলেন।