English

23 C
Dhaka
বুধবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
- Advertisement -

ভবনে বিস্ফোরণ: রাস্তায় হতাহতদের রক্ত, পড়ে আছে পেঁপে-কাচের টুকরো-জুতা

- Advertisements -

রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় একটি তিনতলা ভবনে বিস্ফোরণে তিনজন নিহত ও আরও অনেকেই আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের পর ওই ভবনের সামনের রাস্তায় বিভিন্ন জিনিস ছড়িয়ে পড়ে। এখনো রাস্তায় পড়ে আছে কাচের টুকরো, স্যান্ডেল, হতাহতদের রক্ত, ঝুড়িভর্তি পেঁপে, চেয়ারসহ আরও অনেক কিছু।

রোববার (৫ মার্চ) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এরপর চারিদিক ছেয়ে যায় ধোয়ায়। মুহূর্তেই কান্নাকাটির শব্দ। সকালে দোকান খোলার সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটে যায় ভয়াবহ এ বিস্ফোরণ।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার ওপর পড়ে আছে অসংখ্য মোটা কাচের টুকরো, স্যান্ডেল, ফল বিক্রেতার ঝুড়িভর্তি পেঁপে, চেয়ারসহ আরও অনেক কিছু। তিন তলা ভবনের নিচ তলা ও দ্বিতীয় তলায় কিছু না হলেও বিস্ফোরণের কারণে তৃতীয় তলার দেওয়াল ধসে পড়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের ধারণা, তৃতীয় তলা থেকেই বিস্ফোরণের সূত্রপাত। বিস্ফোরণে তৃতীয় তলায় লাগানো সাইনবোর্ড, এসি ও দোকানের সাটারসহ সবকিছু ধসে পড়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের পর ধোয়ায় আচ্ছন্ন ছিল চারপাশ। আতংকে ভবনে থাকা মানুষ বেরিয়ে আসতে থাকেন। অনেকেই তৃতীয় তলা থেকে লাফ দিয়ে আহত হন।

ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের পাশের প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারের দোকানি আফজাল হোসেন বলেন, বেলা ১১টার আগে আমরা তখন দোকান খুলেছি মাত্র। এরপর হঠাৎ আগুন, আগুন বলে চেঁচামেচি। পরে ঘটনাস্থলে এসে দেখি চারদিকে মানুষ ছোটাছুটি করছে। দুই তিনজন পড়ে আছে রাস্তায়।

ওই ভবনের পাশের বাসিন্দা প্রত্যক্ষদর্শী রহমান আজিজ বলেন, পাশের দোকানে চা খাচ্ছিলাম। এমন সময় শব্দের পর ধোয়ায় আচ্ছন্ন চারদিক। এরপর দেওয়াল ধসে পড়ে। ভয়ে আমার বাসার নিচে চলে আসি। কিছুক্ষণ পর ওই ভবনের কাছে এসে দেখি ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ এসে কাজ করছে।

ওই ভবনে রয়েছে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের অফিস। প্রতিষ্ঠানটির ভিপি মাববুব ই সোবহান বলেন, তাদের কোম্পানিতে সাতজন কর্মরত ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজন নারী ও পাঁচজন পুরুষ। তাদের মধ্যে ছয়জন আহত হয়েছেন। তারা অফিসে কাজ করছিলেন। আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও একজনকে পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, সায়েন্সল্যাব এলাকার একটি তিনতলা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন- শফিকুজ্জামান, আব্দুল মান্নান ও তুষার। এ ঘটনায় আহত হয়ে ১৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন ছয় জন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন সাতজন।

চার কারণে ওই ভবনে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে ধারণা ঢাকা মেট্রোপলিটন (ডিএমপি) পুলিশের।পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে চারটি কারণে এখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। শর্টসার্কিট, জমে থাকা গ্যাস, গ্যাস সিলিন্ডার ও এসির কারণে বিস্ফোরণ।

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ভবনটির অবস্থা এখন পর্যন্ত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, অবস্থা ভালো নয়। ভবনটির তিনতলায় ছোট ছোট অফিস ছিল এবং একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অফিস ছিল। যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমি মনে করি এই মুহূর্তে ভবনটিতে কারও প্রবেশ করা উচিত হবে না। আমরা ঝুঁকি নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল ঘুরে এসেছি, পরিদর্শন করেছি।

ডিএমপির অতিরিক্ত এ পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, এখনই বিস্ফোরণের কারণ বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে চারটি কারণে এখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। শর্টসার্কিট, জমে থাকা গ্যাস, গ্যাস সিলিন্ডার ও এসির কারণে বিস্ফোরণ হতে পারে। তবে এই মুহূর্তে সঠিক কারণটি বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষ হলে কারণ জানা যাবে।

হতাহতের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা শুনেছি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পপুলার হাসপাতাল মিলে ১২ থেকে ১৩ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪-৫ জনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া তিন জন মারা গেছেন।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন