জহিরুল ইসলাম মিশু: ঈদুল ফিতর হচ্ছে ব্যবসার সবচেয়ে বড় মৌসুম। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি।ঈদকে কেন্দ্র করে সিলেট নগরীর প্রায় সব মার্কেটের প্রবেশ মুখ ও বানিজ্যিক এলাকায় রকমারি লাইট দিয়ে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
গত দুই বছর করোনার কারণে ঈদের সময় ছিল নানা বিধি-নিষেধ। অনেক মার্কেট তখন বন্ধ ছিল।এবছর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে করোনার সংক্রমণ। ফলে এবার বেচাকেনার ভালোই হবে বলে আশায় বুক বেঁধেছেন ব্যবসায়ীরা। এবারের ঈদে নিজের ও পরিবারের জন্য ঈদের পোশাক কিনতে সিলেটের বাজারে ক্রেতা সমাগম দ্রুত বাড়ছে। যদিও বিক্রেতারা বলছেন বিক্রি বাড়লে ও এখনো তা আশানুরূপ হয়নি। আর দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।কিছু বিক্রেতারা জানান প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে এবার প্রবাসীরা বেশি না আসায় বিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে না।
রবিবার নগরীর জিন্দাবাজার, নয়াসড়ক,জেলরোড, বন্দরবাজার, কুমারপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায় ঈদের বাজার করতে মার্কেটে ভিড় করছেন মানুষ। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্কদেরও উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে মার্কেটগুলোতে। ক্রেতারা দরদাম করছেন বিক্রেতাদের সাথে। কোথাও দরদামে না হলে যাচ্ছেন অন্য দোকা নে। এভাবে বাজার ঘুরে ঘুরে তারা তাদের পছন্দের জামা কাপড় কিনছেন।
মার্কেট ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েদের জন্য এবারের অন্যতম আকর্ষণ ‘কাঁচাবাদাম’ ‘পুষ্পা’ ‘চেরি’ নামের থ্রি পিস। ইতিমধ্যে এসব কাপড় বেশ সাড়া ফেলেছে আগ্রহী ক্রেতাদের মধ্যে। বাজারে বিভিন্ন রঙের থ্রিপিস রয়েছে কাঁচা বাদামের। প্রকারভেদে আড়াই হাজার থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব থ্রি পিস। কাপড় ভেদে কোনটার দাম কম -বেশি রাখছেন বিক্রেতারা।
বিক্রেতারা জানান ‘কাঁচাবাদাম’ ‘পুষ্পা’থ্রি পিস এর নামকরণ স্থানীয়ভাবে করা হয়নি এটি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান থেকেই করা হয়েছে। ক্রেতারা নাম শুনলেই দেখতে বলছেন আর পছন্দ হলে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে ক্রেতাদের দাবি বিক্রি বাড়াতে বিক্রেতারা স্থানীয়ভাবে এসব থ্রি-পিস এর নামকরণ করেছেন।
এসব থ্রিপিস ছাড়াও জয়পুরি জর্জেট, কাশ্মীরি কাতান পাকিস্তানি ও কাশ্মীর জর্জেট দৃষ্টি কাড়ছে নারী ক্রেতাদের।
এবারও ঈদে কেনাকাটায় ছেলেদের প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবি। গত কয়েক বছরের মতো এবারও বাজারে সুতির, প্রিন্টের পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। এছাড়া সুতার কাজ করা পাঞ্জাবি, ভারতীয় পাঞ্জাবি কদর রয়েছে ক্রেতাদের কাছে। এসব পাঞ্জাবি ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আর ইন্ডিয়ান সিল্ক বিক্রি হচ্ছে আরও বেশি দামে।
নগরীর শুকরিয়া মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী জানান, গত দুই তিন দিন থেকে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। রাতে তারাবির নামাজের পরে ক্রেতা সমাগম কিছুটা বেশি দেখা যায়। যদিও তা আশানুরূপ না।কিছুদিন পর মানুষ বেতন-বোনাস পেলে ক্রেতা বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আমিরুল ইসলাম জানান, ঈদের বাজারে ভোক্তারা যাতে প্রতারিত না হন সেজন্য আমাদের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। প্রতিদিনই জেলা বিভিন্ন শপিংমল ও দোকানে অভিযান চালানো হচ্ছে। কোথাও কোনো অসঙ্গতি পেলে সতর্ক করার পাশাপাশি শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।