পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি মুলা এখন ১ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবুও মিলছে না ক্রেতা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাষিরা। বিক্রির টাকায় শ্রমিকের মূল্যও উঠবে না ভেবে জমি থেকেই মুলা তুলে ফেলে দিচ্ছেন অনেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে ৩১৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে এবার ৩২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে শাকসবজির দাম কিছুটা বেশি থাকলেও উৎপাদন বেশি হওয়ায় কমেছে দাম। এখানকার শাকসবজি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রামের দূর্গাপুর মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, শত শত মণ মুলা তুলে ফেলা দেওয়া হচ্ছে। এসব মুলার জমিতে এখন অন্য ফসল চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা।
মুলা চাষি নাদিরা বেগম বলেন, ‘এবার ১৫ শতাংশ জমিতে মুলার আবাদ করেছিলাম। বাজারে দাম না থাকায় এবং দাগের কারণে জমি থেকে নিজেই মুলাগুলো তুলে ফেলে দিচ্ছি।’
আরেক কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েক মণ মুলা হাটে নিয়ে বিপদে পড়ি। এক টাকা দরেও মুলা বিক্রি করতে পারিনি। এবার মুলা চাষ করে ধরা খেয়েছি। এজন্য মুলা ফেলে দিয়ে ওই জমিতেই অন্য শাকসবজি চাষ করবো।’
মুলা ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী ও সোহেল রানা জানান, শুরুর দিকে আশানুরূপ দাম পেলেও মুলার বাজারমূল্যে দ্রুত ধস নেমেছে। শুরুর দিকে আড়াই হাজার টাকা মণ থাকলেও এখন ৪০ টাকা মণ দরে মুলা বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া হাটে প্রচুর মুলার আমদানি হয়েছে। তাই দাম কম। ফলে মুলা নিয়ে হাটে এসে ক্রেতার অভাবে বসে থাকতে হয়। কেউ দামই করছেন না। এ কারণে কৃষকের লাভ তো দূরের কথা খরচও উঠছে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আবহওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা ছেড়ে গেছে। এবার অন্য সবজির সঙ্গে চাষিরা একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ মুলাও চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হওয়ায় হাট-বাজারে আমদানি বেশি। তাই দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে।