আসছে আত্মসংযম ও ত্যাগের মাস রমজান। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে সিয়াম বা রোজা একটি। রোজা আমাদের আত্মসংযম ও ত্যাগের শিক্ষা দেয়; রোজা আমাদের সব ধরনের অন্যায়, পাপাচার ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখার শিক্ষা দেয়; কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, একশ্রেণির মুনাফাখোর ব্যবসায়ী রমজান মাস এলেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে জনগনের পকেট কেটে নিয়ে যায়। নির্বাচনের পর থেকে চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজসহ দ্রব্যমূল্যের গাপলা ঘোড়া নিয়ন্ত্রনহীন। ফলে রমজান মাসে জনগণের নাভিশ্বাস উঠে যাবে। এ অবস্থা থেকে জনগনকে রেহাই দিতে রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
রবিবার (১০ মার্চ) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ আহ্বান জানান।
তারা বলেন, কয়েক মাস ধরে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি চলছে। রমজান মাস আসতে আর খুব বেশী সময় বাকি নাই। এ অবস্থায় মুনাফাখোর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে ভয়াবহ সঙ্কট তৈরী হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
নেতৃদ্বয় বলেন, প্রতি বছর সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলে, প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা বলে; কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না। মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে, তাদের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় না।
তারা আরো বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হন খেটে খাওয়া ও নিুআয়ের শ্রমজীবী মানুষ, যাদের আয় সীমিত। পাশাপাশি মধ্যবিত্ত শ্রেণিও ভোগান্তির শিকার হন। এবারের রমজান মাসে যাতে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং শ্রমজীবীসহ সব স্তরের মানুষ যাতে উপকৃত হয়, সেজন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
রমজানে খাদ্যদ্রব্যের মূ্ল্য বৃদ্ধি না করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, এ মাস একে অন্যের প্রতি সাহায্য-সহানুভুতির মাস। নিত্যপণ্যের দাম চড়া থাকলে সমাজের গরিব, মিসকিন, এতিম, অসহায় ও সাধারণ অনেক রোজাদার চাইলেও মনমতো ইফতার সাহরি করতে পারে না। তাই রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রেখে রোজাদারদের ইফতার সাহরিতে বিশেষ সহায়তা করুন।
তারা বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে রোজার সময় নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে চিন্তিত সাধারণ মানুষ। কারণ বাজার দীর্ঘদিন ধরে অস্বাভাবিক চড়া। কোনো পণ্যের দাম কমছে না। এমনকি দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমার কোনো সুখবরও নেই বেশ দীর্ঘ সময়। টিসিবি মাধ্যমে সুলভে পণ্য বিক্রি করলেও ভোক্তার দুর্ভোগ কমেনি।
নেতৃদ্বয় বলেন, মূলত রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সরকারের দায়িত্বশীলরাও ব্যবসায়ীদের এ ধরনের তৎপরতায় এক ধরনের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছিলেন। আমরা আশাবাদী হতে চাই। ভোক্তাদের দুর্ভোগ বিবেচনায় রমজানে নিয়মিত বাজার তদারকি অব্যাহত রাখার জন্য সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।