বিশ্ববাজারে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে দেশের শক্ত অবস্থান তৈরি ও পণ্যের বহুমুখীকরণে নির্মিতব্য টেকনোলজি সেন্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি।
আজ রাজধানীর হোটেল রেডিসনে আয়োজিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস (EC4J) শীর্ষক সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় “বঙ্গবন্ধু ডিজাইন এন্ড টেকনোলজি সেন্টার ফর লেদারগুডস এন্ড ফুটওয়্যার” এবং “সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি” সেন্টার নির্মাণ কাজের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টিপু মুনশি জানান, রপ্তানিমুখী ম্যানুফেকচারিং খাতের বিকাশ ত্বরান্বিত করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য হ্রাস করা। এ লক্ষ্য রপ্তানি নীতিতে পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশের ভূমিকা আরো জোরালো করতে পণ্যের বহুমুখীকরণে টেকনোলজি সেন্টারগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রকল্পটি যথা সময়ে শেষ করার উপর গুরুত্বারোপ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০৪০ সালে ৩ শো বিলিয়ন এবং ২০৩০ সালে ১ শো বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি তা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এসব স্থাপনা।
মন্ত্রী বলেন, দেশের বেসরকারি খাত বিশেষ করে রপ্তানিকারকগণ অর্থনীতির একটি বড় চালিকা শক্তি। তাঁরা বাংলাদেশকে বৈশ্বিক রপ্তানি বাজারে অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে এ টেকনোলজি সেন্টারসমূহ ব্যবহারে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন মানসম্পন্ন বহুমুখী পণ্যের মাধ্যমে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, টেকনোলজি সেন্টার দু’টি স্থাপিত হলে সংশ্লিষ্ট খাতের উদ্যোক্তা সহজেই অত্যাধুনিক ও বিশ্বমানের টেকনোলজির সাথে পরিচিত হতে পারবেন। এখান থেকে সেবা নিয়ে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ও পণ্যের গুণগত মান উন্নয়নের মাধ্যমে রপ্তানি বাণিজ্যে আমাদের শক্তি ও সামর্থ্য অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, রপ্তানি বাজার খুবই স্বল্প সংখ্যক পণ্যে সীমাবদ্ধ। শুধুমাত্র তৈরি পোশাকখাত থেকে আমাদের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ আসছে। পক্ষান্তরে রপ্তানি বাজারও সীমিত। এসব চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস (EC4J) প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস (EC4J) প্রকল্পটির প্রকল্প পরিচালক মোঃ মনছুরুল আলম (অতিরিক্ত সচিব) এবং National Development Engineers LTD এর পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়াররম্যান রায়হান মোস্তাফিজ চুক্তি স্বাক্ষর করেন ।
উল্লেখ্য, গাজীপুরের কাশিমপুরে ৫ একর জমিতে “বঙ্গবন্ধু ডিজাইন এন্ড টেকনোলজি সেন্টার ফর লেদারগুডস এন্ড ফুটওয়্যার” এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি-তে ৫.২ একর জমিতে “সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি” নির্মিত হবে।
রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণসহ বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার এবং বিশ্বব্যাংক এর অর্থায়নে এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস শীর্ষক সংশোধিত প্রকল্পটির আওতায় তৈরি পোশাক শিল্পের বাইরে সম্ভাবনাময় চারটি খাত যথাঃ চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য; পাদুকা; হালকা প্রকৌশল; এবং প্লাস্টিক খাতের পণ্য রপ্তানির বাজারে প্রবেশের প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূরীকরণে সহায়ক ভুমিকা রাখছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা কমিশন সদস্য (সচিব) আব্দুল বাকী বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। এছাড়া, বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারাকস এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সামিম আহমেদ এবং বাংলাদেশ ইন্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রিজ অনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন।