বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ভোজ্য তেলের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ভোজ্য তেল একটি আমদানি নির্ভর পণ্য। দেশের মোট চাহিদার মাত্র ১০ ভাগ স্থানীয় উৎপাদন থেকে মিটানো হয়, বাকি ৯০ ভাগই আমদানি করে প্রয়োজন মেটাতে হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের মূল্য ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাবার কারণে আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়েছে।
তিনি বলেন, ভোজ্য তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে মিলগেইট থেকে শুরু করে পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। অনিয়ম ধরা পড়লে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, ঈদুল ফিতরের আগে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী বাজারে ভোজ্য তেল সরবরাহ না করে মজুত করার চেষ্টা করেছে। তবে, অভিযান পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস করেছিলাম এটাই আমাদের ব্যর্থতা। বিশ্বাস করা ভুল হয়েছে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আমরা শিখেছি মানুষকে বিশ্বাস করতে হয়। মিল মালিকরা কথা রাখলেও খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছি। আগামীতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেজন্য সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী জুন থেকে আবারও এক কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে ভোজ্যতেল সরবরাহ করা হবে। টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে ভোজ্য তেল সরবরাহ অব্যাত রয়েছে। পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে দেশের ১ কোটি নিম্নআয়ের পরিবারকে ভোজ্য তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ১০ ভাগ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। অগ্রাধীকার ভিত্তিতে আমদানিকৃত তেল খালাস, শুল্কায়ন এবং পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিলারদের নামে ভোজ্য তেলের সাপ্লাই অর্ডারের (এসও) মাধ্যমে তেল উত্তোনের সময় কমিয়ে ১৫ দিন করা হয়েছে, যাতে বাজারে তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে। রিফাইনারিগুলো থেকে প্রতিদিনের তেল সরবরাহের তথ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা নেওয়া হচ্ছে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আফজাল হোসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) মালেকা খায়রুন্নেছা, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমানসহ ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীরা এ প্রেস ব্রিয়িংয়ে উপস্থিত ছিলেন।