English

21 C
Dhaka
শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
- Advertisement -

‘পোশাক খাতের অস্থিরতায় প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন রয়েছে’

- Advertisements -
শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘বিগত সময়ে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এসব সংগঠনে গণতান্ত্রিক চর্চা ছিল না। সিলেকশনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা এমপি-মন্ত্রী হলে স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
বাংলাদেশের পোশাকশিল্প সম্পর্কে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের অপচেষ্টা করা হয়েছে। যাতে আমাদের বৈদেশিক রপ্তানি সংকুচিত হয়। এ ছাড়া ভুল তথ্য ছড়িয়ে একটি মহল শিল্প এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতার পেছনে প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন রয়েছে।

আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এফডিসিতে শ্রম অধিকার ও পোশাক খাতে অস্থিরতা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘পোশাকশিল্প খাতে অস্থিরতা দীর্ঘায়িত হলে ক্রয়াদেশ অন্য দেশে চলে যেতে পারে। সে কারণে ষড়যন্ত্রকারীরা এ দেশের পোশাকশিল্পে বিশৃঙ্খলা তৈরিতে সচেষ্ট রয়েছে।তবে সরকারের যথাযথ উদ্যোগে অসন্তোষ অনেকাংশে দূর হয়েছে। একই দেশে দুই ধরনের শ্রম আইন থাকতে পারে না। ইপিজেডে শ্রমিক সংগঠন চালুর বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষসহ অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল নিয়ম মেনে পরিচালিত হয়নি।

এই তহবিলের টাকা এমন কিছু ব্যাংকে রাখা হয়েছে, যেসব ব্যাংক এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই তহবিলে এক হাজার কোটি টাকা রয়েছে। বর্তমান সরকার এই তহবিল পরিচালনায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে।’

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিকে সমর্থন করি। শ্রমিকদের বেতন বৈষম্যসহ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করাকে কোনোভাবেই গ্রহণ করি না। তবে শ্রমিকদের অযৌক্তিক দাবিদাওয়ার নামে বিক্ষোভ আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না। বাহিরাগতরা দলবলসহ কারখানায় প্রবেশ করে সাধারণ শ্রমিকদের বিক্ষোভে অংশ নিতে প্ররোচিত করাকে গ্রহণ করি না। আমরা মনে করি, পোশাকশিল্পকে অস্থিতিশীল করে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত এসব ব্যক্তি।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেখা গেছে শ্রমিক আন্দোলনের উসকানিদাতাদের কেউ কেউ পোশাক শ্রমিক নেতা কিংবা পোশাক শ্রমিকও নন। অভিযোগ রয়েছে, পার্শ্ববর্তী একটি দেশ এই অস্থিতিশীলতা তৈরি করে আমাদের পোশাকশিল্পের বাজারকে দখল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাই মালিক-শ্রমিক সবাই মিলে পোশাকশিল্পে অহেতুক শ্রমিক অসন্তোষ বন্ধে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ বের করবেন বলে আশা করছি। বিগত সরকারের সময়ে সরকার শ্রমিক সংগঠনের সমর্থন আদায়ে তথাকথিত কিছু ডামি শ্রমিক সংগঠনকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল। এসব সংগঠনের নিবন্ধন যথাযথ নিয়মে হয়েছে কি না তা অনুসন্ধান করা জরুরি। সম্প্রতি পোশাক খাতে অস্থিরতা তৈরির পেছনে রাজনৈতিক স্বার্থে এসব ইয়েলো ট্রেড ইউনিয়ন কাজ করছে কি না, সেটিও অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

কিরণ বলেন, ‘‌দেশি-বিদেশি ইন্ধন ছাড়াও শ্রমিকদের বেতন বৈষম্য, কাজের অনিশ্চয়তা, কিছু কারখানা মালিকের অনুপস্থিতি, ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অপর্যাপ্ততাসহ নানা কারণে পোশাকশিল্পে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে পোশাকশিল্পে প্রায় ৪০ লাখের বেশি কর্মী কাজ করছে। যাদের শ্রমে-ঘামে এই শিল্পটি বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তারা যদি ন্যূনতম বেতন না পায়, শোভন কর্মপরিবেশ না থাকে, নিরাপদ কারখানা তৈরি করা না হয়, শ্রম অধিকার লঙ্ঘিত হয় ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা না থাকে তাহলে কারখানা মালিকদের সিআইপি-ভিআইপি মর্যাদাসহ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ম্লান হয়ে যাবে। তাই পোশাকশিল্প মালিকদের উচিত হবে প্রত্যেক শ্রমিক, কর্মচারী-কর্মকর্তাদের নিজের সন্তানের মতো ভালোবেসে পরিবারের সদস্য মনে করা। অন্যদিকে শ্রমিকদের উচিত হবে ফ্যাক্টরি মালিকদের অভিভাবকের মর্যাদা দিয়ে অকারণে কারখানায় অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি না করা। কারণ এই খাতে বিনিয়োগ কর্মসংস্থান ও রপ্তানি ব্যাহত হলে অর্থনীতিতে ধস নামবে। তখন মালিকও থাকবে না, শ্রমিকও থাকবে না।’

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন