পরীমণির ফেসবুক লাইভের পর লকডাউন ভেঙে বনানীর আশপাশের অনেকেই পরীমনির বাসার নিচে জড়ো হন। যদিও পরীমনিকে রক্ষার উদ্দেশ্যে নয়; মানুষ জড়ো হয়েছিলেন কৌতূহল বশত। এর পর পরীমনির বাসায় র্যা বের অভিযানের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর উৎসুক জনতার ভিড় আরও বাড়ে।
আর সেই সুযোগে ভিড়ের মাঝেই ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ দোকান খুলে বসেন হকাররা। বেশ কয়েকজনকে ঝালমুড়ি, চানাচুর ও ডাব বিক্রি করতে দেখা যায়। এ সময় অনেক মাস্ক নিয়ে এসেছিলেন বরগুনার মো. এমদাদুল হক। পরীমনির বাসার নিচে ৩০ মিনিটে বিক্রি হয়ে যায় এমদাদুলের সব মাস্ক।
পরীমনির দুঃসময়ে এমদাদুল খুশি। একেই বলে— কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। পরীমনির বাসার নিচে মোক্ষম সময়ে এসে মাস্ক বিক্রি করে এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল এমদাদ। তাকে নিয়ে রসিকতায় মেতেছেন নেটিজেনরা। অনেকে আবার এমন বুদ্ধির জন্য বাহবা দিচ্ছেন। কেউবা বলছেন, করোনায় অসেচতন উৎসুক জনতার মাঝে সংক্রমণ ঠেকাতে এমদাদুলের মাস্ক বিক্রি প্রশংসনীয়। কেউ বলছেন, একেই বলে পারফেক্ট বিজনেস স্ট্রেটেজি। কেউ কেউ এমদাদুলের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন— দেখুন রথ দেখা আর কলা বেচা।
কেউ লিখেছেন, আল্লাহ কিসের মাধ্যমে কার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন সেটি একমাত্র আল্লাহই জানেন। মাস্ক বিক্রি করে ভাইরাল এমদাদুল হকের সাক্ষাৎকারও নিয়েছে কিছু গণমাধ্যম। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ, পেজে হয়েছে তাকে নিয়ে জম্পেশ আলোচনা।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মো. এমদাদুল হক জানিয়েছেন, এই করোনায় পেট চালাতে মাস্ক বিক্রি করেই চলছেন বরগুনার মো. এমদাদুল হক। প্রতিদিন ২০০ মাস্ক বিক্রি করলে সংসারের খরচ চলে। কিন্তু গত কয়েক দিনের কঠোর লকডাউনে টার্গেট পূরণ হচ্ছিল না তার। এতে হতাশ হয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি।
মাস্ক বিক্রেতা এমদাদুল হক বলেন, বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে একটি ক্যান্টিনের টিভিতে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটকের খবর পাই। টেলিভিশনে দেখি নায়িকার বাসার সামনেই হাজার হাজার মানুষের ভিড়। করোনা পরিস্থিতিতে এত ভিড় যে, বনানী সোসাইটি থেকে মাস্ক পরার জন্য মাইকিং করা হচ্ছিল। এটি শুনেই আমি মাস্কের ব্যাগ হাতে নিয়ে দৌড়িয়ে চলে যাই পরীমনির বাসার সামনে। ৩০ মিনিটেই সব মাস্ক বিক্রি হয়ে যায় আমার। কিন্তু তখনও আরও অনেকে মাস্ক চাইছিল আমার কাছে। তখন স্ত্রীকে ফোন করে বাসা থেকে আরও মাস্ক আনি। সেগুলোও বিক্রি হয়ে যায় কয়েক মিনিটের মধ্যেই।
ঠিক কতগুলো মাস্ক বুধবার বিকালে বিক্রি করেছেন তার হিসাব না দিতে পারলেও এতগুলো মাস্ক এর আগে কখনও একদিনে বিক্রি করতে পারেননি বলে জানান এমদাদুল। এক কথায় পরীমনি আটকে এমদাদুলের মাস্ক বিক্রির ব্যবসা ছিল রমরমা।