খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) ও খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি চালু হওয়ায় বাজারে চালের দাম কমবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। আজ বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার আজিমপুরে ছাপড়া মসজিদ প্রাঙ্গণে সারাদেশে শুরু হওয়া খাদ্যবান্ধব ও ওএমএস কর্মসূচির চাল-আটা উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ওএমএস ও খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে প্রতি মাসে তিন লাখ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হবে। বর্তমানে দেশে প্রায় বিশ লাখ টন খাদ্য শস্য মজুত আছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আরও গম এবং চাল আমদানি করা হবে বলে জানান তিনি। খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মিলে কি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে? সেখান থেকে আড়তে তারা কি দরে বিক্রি করছে এবং আড়ত থেকে কিনে খুচরা বিক্রেতারা কত লাভে বিক্রি করছে এটা মনিটর করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। দেশের চালের কোনো সংকট নেই, প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দিকে তাকালেই দেখা যায় প্রচুর পরিমাণ চাল রয়েছে।
চালে কেউ অস্বাভাবিক মুনাফা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কঠোর মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। বাজারে বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সিন্ডিকেট রয়েছে, এই সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব কিনা– জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব না। এ ব্যাপারে তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান।
দেশের পর্যাপ্ত চাল মজুত থাকার পরও কেন বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে– এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী জানান, প্রতিবছর আবাদি জমির পরিমাণ কমছে চাষিরা আম আনারসসহ বিভিন্ন ফসলের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। এই কারণে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় চাল এবং গম আমদানি করা হচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী আরও জানান, সরু চাল যাতে অবাধ আমদানি হয় সে জন্য সরকার ট্যাক্স কমিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে অচিরেই বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি হবে।
আজ ওএমএসের মাধ্যমে জনপ্রতি ৫ কেজি চাল ও ২ কেজি আটা বিক্রি করা হচ্ছে। দেশের ৫০ লাখ হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ১৫ টাকা কেজি ধরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হবে। আর ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) মাধ্যমে ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল দেওয়ার পাশাপাশি ৩০ টাকা কেজি দরে ১০ কেজি করে দরে কার্ডধারী সাশ্রয়ী মূল্যে চাল কিনতে পারবেন।
আগামী সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এই তিন মাস খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে চাল বিতরণ করা হবে। এসময় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: সাখাওয়াত হোসেন,খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: মজিবুর রহমান, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনার হাসিবুর রহমান মানিক উপস্থিত ছিলেন। এর আগে খাদ্যমন্ত্রী নারায়নগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও চাষাড়া মোড়ে ওএমএস কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।