ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রচলিত সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য ডিজিটাল কমার্স একটি বড় প্লাটফর্ম হিসেবে গড়ে ওঠছে।আগামীর বাংলাদেশে কেবল বাণিজ্যই নয়, শিক্ষা, কৃষি, চিকিৎসা ও কলকারখানাসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র ডিজিটাল মহাসড়ক দিয়েই এগিয়ে যাবে। ডিজিটাল মহাসড়ক নির্মাণ প্রক্রিয়া স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতেই সম্পন্ন হবে। করোনাকালে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করতে ইতোমধ্যে দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকা ৪জি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে।হাওর, দ্বীপ ও দূর্গম চরাঞ্চলসহ দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌছে দেওয়ার কাজ চলছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতেই তা সম্পন্ন হবে।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ই-ক্যাব আয়োজিত কোভিড পরবর্তী পৃথিবীতে বৈশ্বিক বাজারের ডিজিটাল কমার্স সংক্রান্ত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ই-ক্যাব সভাপতি শমি কায়সারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য ফাহিম রাজ্জাক, ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো : সিরাজ উদ্দিন, সাবেক সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন ও মফিজুর রহমান এবং ই-ক্যাব এর সেক্রেটারি আবদুল ওয়াহেদ তমাল বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে এটুআই কর্মকর্তা রেজোয়ানুল হক জামি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ডিজিটাল মহাসড়ক গড়ে তুলতে না পারলে ডিজিটাল সাম্য সমাজ গড়ে উঠবে না উল্লেখ করে ই-ক্যাবের প্রতিষ্ঠার পৃষ্ঠপোষক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডাকঘর দেশব্যাপী বিশাল নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল কমার্সের বিকাশে সম্ভাব্য সব কিছু করতে বদ্ধপরিকর। এই লক্ষ্যে কাজ চলছে। ডিজিটাল কমার্সের পাশাপাশি ডাকঘরে বিদ্যমান অন্যান্য সেবা কর্মকাণ্ড জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে পুরো ডাকসার্ভিস ডিজিটালাইজেশন করার কার্যক্রমও আমরা শুরু করেছি। তিনি ডিজিটাল কমার্সের বিকাশে নীতিগত যে কোন সহায়তা প্রদানে সরকার খুবই আন্তরিক উল্লেখ করেন। ইন্টারনেটের মূল্য বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে এক এমবিপিএস ইন্টারনেটের মাসিক মূল্য ছিল ২৭ হাজার টাকা । বর্তমানে তা কমিয়ে ২৮৫ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যাতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন সে চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেট ব্যয় নয়, এটি বিনিয়োগ। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ইতোমধ্যে ৫৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্রি ওয়াই ফাই জোন করে দিয়েছে। ছাত্র ছাত্রীদের জন্য টেলিটক ফ্রি ইন্টারনেট দিয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে ফ্রি ওয়াই ফাই জোন চালু করা হবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি জানান যে বিটিসিএল ১২ হাজার ফ্রি ওয়াইফাই জোন তৈরি করছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যাতে সহজে পায় সে লক্ষ্যে স্বল্প মূল্যে তাদের স্মার্ট ফোন সরবরাহ করার বিষয়টি নিয়েও সরকার চিন্তাভাবনা করেছে উল্লেখ করেন। মন্ত্রী বলেন, দেশে ব্যবহৃত স্মার্ট ফোনের শতকার ৮২ ভাগ বাংলাদেশের উৎপাদিত স্মার্ট ফোন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রযুক্তি বান্ধব নীতির ফলে বাংলাদেশ এখন ৫জি ফোন উৎপাদন করে তা বিদেশে রপ্তানি করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মন্ত্রী ডিজিটাল কমার্সের অগ্রযাত্রায় ই-ক্যাবের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা ডিজিটাল কমার্সের পলিসি এন্ড এডভোকেসি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তারা আশা করছেন ডিজিটাল কমার্সের বিদ্যমান সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে ডিজিটাল কমার্স ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মার্কেটে পরিণত হবে।