চালের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে দিনাজপুরে খোলা বাজারে (ওএমএস) চাল ও আটা বিক্রি শুরু হলেও বেড়েই চলেছে চালের দাম।
চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে দিনাজপুর জেলার ৯টি পৌর এলাকায় গত ২২ জানুয়ারি থেকে খোলা বাজারে (ওএমএস) চাল ও আটা বিক্রি শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ।
দিনাজপুর জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক এসএম সাইফুল ইসলাম জানান, দিনাজপুর জেলার ৯টি পৌরসভায় প্রতিদিন মোট ৪০ টন চাল ও ৪০ টন আটা খোলাবাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে গত ২২ জানুয়ারি থেকে। প্রতিকেজি চাল ৩০ টাকা এবং আট ১৮ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। ৯টি পৌরসভার মোট ৪০ জন ডিলারের মাধ্যমে খোলাবাজারে এসব চাল ও আটা বিক্রি কার্যক্রম চলছে।
এদিকে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে খোলা বাজারে এসব চাল ও আটা বিক্রি শুরু করা হলেও ধানের জেলা দিনাজপুরে আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে চালের বাজার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে চালের দাম।
শুক্রবার দিনাজপুর শহরের প্রধান চালের বাজার বাহাদুরবাজারে গিয়ে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি চালের দাম দুই টাকা থেকে তিন টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে বিআর-২৮ জাতের চাল ৫৩ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা, মিনিকেট চাল ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৬২ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৬৮ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, স্বর্ণা চাল প্রকারভেদে ৪০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকায়।
আরও দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) চালের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা, আর পাইকারী বাজারে বেড়েছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা।
বাহাদুরবাজারের পাইকারী চাল বিক্রেতা এরশাদ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী এরশাদ আলী জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারী বাজারে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়ে বর্তমানে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা গুটিস্বর্ণা দুই হাজার টাকায়, পাইজাম দুই হাজার ২৫০ টাকায়, বিআর-২৯ চাল দুই হাজার ৪০০ টাকায়, বিআর-২৮ চাল দুই হাজার ৭০০ টাকায়, প্রকারভেদে প্রতিবস্তা মিনিকেট দুই হাজার ৮৫০ টাকা থেকে তিন হাজার ১০০ টাকায়, নাজির শাইল তিন হাজার ৪০০ টাকায়, সিদ্ধ কাটারী পাঁচ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল এনে প্রতি বস্তায় ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা লাভে তারা চাল বিক্রি করে থাকেন। মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় বাধ্য হয়েই তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
দিনাজপুর চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোছাদ্দেক হুসেন জানান, বাজারে ধানের প্রাপ্যতা কমে যাওয়ার কারণেই চালের দাম বেড়েছে। আগামী দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে ধানের সরবরাহ বেড়ে গেলে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে।
উল্লেখ্য, ধানের জেলা দিনাজপুরে প্রতিবছর চাল উৎপাদন হয় ১৪ লাখ মেট্রিক টন। এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় নয় লাখ মেট্রিক টন চাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়।