বিয়ের পর জামাইয়ের মাদক সেবন নিয়ে স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বিরোধে জের ধরে শ্বশুরবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং শাশুড়িকে পিটিয়ে আহত করেছেন জামাই। এ সময় শ্বশুরসহ এক চাচাশ্বশুরের ঘরে আগুন দেন তিনি।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে বাউফল পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ডের বাসসট্যান্ড খারাকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, জয়নাল হাওলাদারের ছেলে ফয়সাল হাওলাদার (২৫) তিন বছর আগে আপন চাচা রফিক হাওলাদারের মেয়ে আঁখিনুরকে (২২) পরিবারের অসম্মতিতে জোর করে বিয়ে করেন। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তি চলে আসছিল। ফয়সাল মাদক সেবন করে প্রায়ই স্ত্রী আঁখিনুরকে মারধর করতেন। এ কারণে আঁখিনুর অধিকাংশ সময়ই বাবার বাড়ি থাকতেন।
ফয়সাল ও আঁখিনুরের বাবাসহ এক চাচা একই বাড়িতে পাশাপাশি ঘরে বসবাস করেন। ঘটনার আগের দিন রোববার রাতে ফয়সাল তার স্ত্রী আঁখিনুরকে জোর করে শ্বশুরের ঘর থেকে তুলে নিয়ে যান। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় তার বাবা রফিক হাওলাদার আঁখিনুরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ফয়সাল সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে শ্বশুরের ঘরে গিয়ে হামলা করে টিভি, ফ্রিজ ও অন্যান্য মালামাল ভাঙচুর করেন এবং শাশুড়িকে পিটিয়ে আহত করেন। এ ঘটনার পর রফিক হাওলাদার থানায় অভিযোগ করলে দুপুর ১টার দিকে ওই বাড়িতে পুলিশ গেলে ফয়সাল গা ঢাকা দেন। এরপর পুলিশ চলে আসার পর দুপুর আড়াইটার দিকে ফয়সাল বাড়ি ফিরে তার শ্বশুর রফিক হাওলাদারের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন। সেই আগুনে পাশে থাকা অপর চাচাশ্বশুর শাহআলম ওরফে বোবা শাহআলমের ঘরটিও পুড়ে যায়। অভিযুক্ত ফয়সাল ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক থাকায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
বাক-প্রতিবন্ধী শাহআলম হাওলাদারের স্ত্রী নুরুন নাহার বলেন, বউ দিতে না চাওয়ায় আমার ভাসুরের ছেলে ফয়সাল তার শ্বশুরের ঘরে আগুন দিয়েছে। পাশাপাশি ঘর হওয়ায় সেই আগুন আমার ঘরেও লাগছে।
প্রতিবেশী সবুজ সরকার বলেন, মাদকাসক্ত ফয়সাল তার শাশুড়িকে মারধর করেন। অসুস্থ শাশুড়ি বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গেলে ফাঁকা ঘরে অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যান ফয়সাল।
বাউফল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আ. লতিফ খান বাবুল বলেন, ফয়সাল একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। ফয়সালের পরিবারকে বেশ কয়েকবার বলার পরেও তারা ফয়সালকে সংশোধন করেনি বলেই আজ এই ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।