বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রামানন্দেরআক গ্রামে স্বামী, ভাসুর ও জা’ এর নির্যাতন সইতে না পেরে টুম্পা অধিকারী নামে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আত্মহত্যার আগে টুম্পা তার দুই পায়ে নিজের মৃত্যুর কারণ ও দায়ীদের নাম এবং মৃত্যুর পর মায়ের চিতার কাছে তার মরদেহ সৎকারের অনুরোধ করে বলে জানায় পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে বিষপান করে আত্মহত্যা করে সে। বুধবার বিকেলে টুম্পার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে টুম্পার বোন কল্পনা অধিকারী বাদী হয়ে টুম্পার স্বামী স্বপন মন্ডল, ভাসুর বিবেক মন্ডল ও জা রীতা রানী মন্ডলকে আসামি করে আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই অভিযুক্ত স্বামী স্বপন মন্ডলকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বপনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
টুম্পার স্বামী গ্রেফতারকৃত স্বপন মন্ডল মাদারীপুর জেলার ডাসার থানার নবগ্রাম এলাকার প্রয়াত বঙ্কিম মন্ডলের ছেলে।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার জানান, ১১ বছর আগে পারিবারিকভাবে টুম্পার সাথে স্বপনের বিয়ে হয়। শ্বশুর বাড়ির লোকজনের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে টুম্পা তার স্বামীকে নিয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলার রামানন্দেরআক গ্রামে বাবার বাড়িতে থাকতো। টুম্পা ও স্বপন শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। তাদের ৮ বছর বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
জমিজমাসহ পারিবারিক নানা বিষয়ে সুরহা করতে গত মঙ্গলবার সকালে টুম্পা তার শ্বশুর বাড়ি মাদারীপুরের নবগ্রাম এলাকায় যায়। এসময় ভাসুর বিবেক মন্ডল ও জা রীতা রানী মন্ডল তাকে অশ্রাব্য ভাষায় অপমান অপদস্ত করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এসময় স্বামী স্বপন মন্ডল এর প্রতিবাদ করেনি। আগে সেও স্ত্রীর উপর নির্যাতন করতো বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে টুম্পা ওই রাতেই পিত্রালয়ে ফিরে বিষপানে আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। মামলার এক নম্বর আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
এদিকে, মামলা তদন্ত কর্মকর্তা আগৈলঝাড়া থানার এসআই মো. মিশু জানান, টুম্পার সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করার সময় হাঁটুর নিচের অংশে পায়ে কলম দিয়ে তার মৃত্যুর কারণ ও মৃত্যুর জন্য দায়ী স্বামী স্বপন মন্ডল, ভাসুর বিবেক মন্ডল ও বিবেকের স্ত্রী রীতা মন্ডলের নাম লিখে রেখে যায়। এছাড়াও তার মায়ের শ্মশানের কাছে তার মরদেহ সৎকার করার আকুতির কথা লেখে গেছেন।