চট্টগ্রাম: নগরের উত্তর কাট্টলীতে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন একটি পুকুরে বড় হচ্ছে ইলিশ। চার মাস আগে ওই পুকুরে সাগরের লবণাক্ত পানি প্রবেশ করানো হয়।
মেসার্স আরবান ফার্মস এর মালিকানাধীন ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের পুকুরটিতে ৪০-৮০ গ্রাম ওজনের জাটকা ইলিশ পেয়ে চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসকে অবহিত করা হয়। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ পুকুর পরিদর্শন করে এর সত্যতা পেয়েছেন।
আরবান ফার্মস এর কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, এখানকার ১৩টি পুকুরে জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি ঢুকতো।
বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বড় হতো। কিন্তু এবারই প্রথম ইলিশ বাড়তে দেখলাম। যখন ইলিশ শিকার ও ডিম সংগ্রহে নিষেধাজ্ঞা ছিল, ওই সময় সাগরের পানি ঢোকানো হয়। অন্যান্য ডিমের সাথে ইলিশের ডিমও ঢুকে যায়। তিন মাস পর পুকুরে জাল ফেলে দেখা যায়, ৩-৪ ইঞ্চি বড় হয়েছে জাটকা ইলিশ।
মাছ চাষিরা জানান, চৈত্র-বৈশাখে পুকুরে পানি ঢোকালে আরও বড় হবে ইলিশের আকার। তিন মাস পর একেকটি মাছের ওজন হবে সাড়ে ৩শ-৪শ গ্রাম। আরও বড় পুকুরে রাখলে ১ কেজি থেকেও বেশি ওজন বাড়তে পারে।
তবে মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, আবদ্ধ মিঠা পানিতে বড় হওয়ায় এসব ইলিশের গুণাগুণ কমে গেছে। স্বাদও তেমন নেই। সেখানকার পুকুরগুলো যেহেতু জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়, সেহেতু জোয়ারের পানির সঙ্গে ইলিশ পুকুরে ঢুকে পড়ে এবং কিছু কিছু ইলিশ পরবর্তীতে পুকুরে আটকা পড়তে পারে। এসব ইলিশ দীর্ঘদিন ধরে মিঠা পানিতে আটকা থাকার কারণে দেখতে ইলিশের মতো হলেও গুণাগুণ হারিয়ে ফেলে।
পুকুরের তত্ত্বাবধায়ক আবু তৈয়ব জানান, আরবান ফার্মস এর ছোট-বড় সবগুলো পুকুরে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ বিভিন্ন জাতের মাছের পাশাপাশি সামুদ্রিক কোরাল, চিংড়িও চাষ করা হয়। এবারই প্রথম ইলিশ চাষ হচ্ছে। পুকুরে জাল ফেলে জাটকা ইলিশ পাওয়া গেছে। এগুলো আরও বড় করতে পরিচর্যা চলছে।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, জোয়ারের পানি পুকুরে ঢুকে যাওয়ার সময় ইলিশের নিষিক্ত ডিম ঢুকতে পারে। পুকুরটির পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ প্রতি লিটার পানিতে ৩ পিপিএম। সমুদ্রের পানির লবণাক্ততা প্রায় ৩৫ হাজার পিপিএম, প্রতি লিটার পানিতে ৩৫ গ্রাম লবণের সমতুল্য। তাই পুকুরে লবণ পানির গভীরতা বাড়ানোর পাশাপাশি অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে জাটকা ইলিশ বড় হতে পারে।