প্রজনন মৌসুমের কারণে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) থেকে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জেলেদের কাঁকড়া ধরার পাস (অনুমতিপত্র) বন্ধ রাখা হয়েছে। ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরবনের পশ্চিম ও পূর্ব এই দুই বিভাগে এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল করিম জানান, প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়া রক্ষা করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এ দুই মাস সুন্দরবনের নদী-খালে কাঁকড়া ডিম পাড়ে। এ সময়কালে কাঁকড়ার প্রজনন নির্বিঘ্ন রাখতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া কাঁকড়ার যখন ডিম হয়, তখন কাঁকড়া ধরা খুবই সহজ হয়ে থাকে। কারণ এ সময়ে কাঁকড়া খুব ক্ষুধার্ত থাকে। এদের সামনে যে খাবার দেওয়া হয়, তাই খাওয়ার জন্য দ্রুত এগিয়ে আসে। যদি এ সময় কাঁকড়া শিকার না করা হয়, তাহলে পরের বছর বেশি কাঁকড়া উৎপাদন সম্ভব। কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুমকে ঘিরে সুন্দরবনে বনরক্ষীদের টহল জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে, নিষেধাজ্ঞা সামনে রেখে কয়েক দিন ধরে গহীন সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরেছেন উপকূলীয় অঞ্চলের কাঁকড়া ধরার জেলেরা। তবে এই দুই মাস সংসার কিভাবে চলবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা কাঁকড়া ধরার জেলে মহিদুল খাঁন।
তিনি বলেন, বন্ধের দিনগুলোয় তাদের জন্য সরকারি কোনো ভাতার ব্যবস্থা না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করতে হবে।
সোনাইলতলা ইউনিয়নের মো. লিটন গাজী বলেন, তার কাঁকড়া ধরার সকল নৌকা নিয়ে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরে এসেছি। আর্থিকভাবে স্বচ্ছল কোনো লোক সুন্দরবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া ধরতে যান না। দুই মাস নিষেধাজ্ঞা চলাকালে আমাদের পরিবার নিয়ে চলতে কষ্ট হবে।