কুমিল্লায় রবিশস্য ও আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। এতে কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে আবাদ হওয়া সরিষা ও আলুর জমির। কৃষি বিভাগের দাবি বৃষ্টি বাড়লে এই ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে। গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েন। এদিকে বৃষ্টিতে কুমিল্লার নগরীর জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। নগরীর বেশকিছু জায়গা প্লাবিত হয়েছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ভুবনঘর গ্রামের কৃষক শামসুল হক শামসু বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে আমার ১৫৫ শতক জমির চিনিগুড়া চাল, সরিষার বীজ, রকমেলন ও স্কোয়াশ সবজি। এর মধ্যে বেশি ক্ষতি হয়েছে চিনিগুড়া চাল আর সরিষার জমির। অসময়ের বৃষ্টি আমার সব ফসল কেড়ে নিলো!’
বৃষ্টি ভেজা শরীরে ফসলের মাঠে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন তিনি। প্রতিবছর দেশি-বিদেশি জাতের অনেক ফলমূল ও শাকসবজি আবাদ করে থাকেন। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে সৃষ্টি লঘুচাপের বৃষ্টিতে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শুধু শামসু নয়, কুমিল্লার বরুড়া,বুড়িচং,চান্দিনা ও মুরাদনগরসহ বিভিন্ন উপজেলার এমন শতশত কৃষক হঠাৎ বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
কুমিল্লা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অসময়ের বৃষ্টিতে আমন ধানের পাশাপাশি কুমিল্লায় রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সরিষা ও আলুর আবাদ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্র জানায়, কুমিল্লায় প্রায় ১৩শ’ হেক্টর জমিতে আলু ও প্রায় ছয় হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। ইতোমধ্যে সরিষার বীজ বপন করা হয়েছে। যেসব জমিতে আলুর আবাদ হয়ে, ওইসব জমির ১০ শতাংশে আলুর আবাদ ইতোমধ্যে হয়ে গেছে।
কৃষি অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, বৃষ্টি আরও একদিন দীর্ঘায়িত হলে আবাদ হওয়া সরিষা ও আলুর জমি নষ্ট হয়ে যাবে। যারা আমন ধান কেটে জমিতে রেখেছেন, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ওইসব ধানের গুণগত মান কমে যাবে। তবে ধান যারা কাটেননি, তাদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কম।
এদিকে বৃষ্টিতে কুমিল্লার নগর জীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গা প্লাবিত হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে গৃহবন্দি হয়ে গেছে নগরীর লক্ষাধিক মানুষ। সোমবার এইচএসসির পদার্থ বিজ্ঞান ২য় পত্রের পরীক্ষা ছিল। বৃষ্টি ও জলজটের কারণে পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগে পড়তে দেখা যায়।
কুমিল্লার আবহাওয়া কর্মকর্তা ইসমাইল ভূঁইয়া জানান, কুমিল্লায় গত চব্বিশ ঘণ্টায় (বিকেল পর্যন্ত) ১০২ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার বৃষ্টিপাত কমে আসবে। বুধবার থেকে আকাশ পরিষ্কার হয়ে আসবে। এসময়ে রাতের তাপমাত্রা কমে শীত শুরু হবে।