এইচ,এম,শফিউল ইসলাম: চলতি মৌসুমে পাইকগাছা কপিলমুনিতে কাগজি লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে। চাহিদা ও কম মূল্যে বাগান মালিক হতাশ আর বাজারে চাহিদা কম থাকায় ব্যবসায়ীদের লেবুর ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। করোনার প্রভাব কম থাকায় লেবুর চাহিদা নেই দামও কম।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ছড়ানো ছিটানো ভাবে প্রায় ২২ হেক্টর জমিতে কাগুজি লেবুর চাষ হয়। সব মিলিয়ে উপজেলায় ৫ হাজারের উপরে লেবুর গাছ আছে। উপজেলার গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলী ইউনিয়নে আংশিক এলাকায় লেবুর বাগান রয়েছে। উপজেলার প্রায় সকল গ্রামে বাণিজ্যিক ভাবে লেবুর বাগান গড়ে উঠছে। বিশেষ করে বাগান মালিকরা বাগানের বেড়া দিতে প্রয়োজনীয় বাঁশের মূল্য বেশি হওয়ায় তারা বাগানের চারপাশে সীমানা দিয়ে লেবু গাছ লাগিয়ে বাগান সুরক্ষা করছে।
লেবু গাছে ছোট ছোট কাঁটা থাকায় গরু, ছাগল, ভেড়া প্রবেশ করতে পারে না। একদিকে বেড়া দেয়ার খরচ বাঁচে ও অন্যদিকে আইলে লেবু গাছ লাগিয়ে বাগান মালিকরা লাভবান হচ্ছে।
ঔষধী গুণেভরা কাগজি লেবু সকলের প্রিয়। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কাগজি লেবু না হলেই নয়। এপ্রিল মাসে লেবু গাছে ফুল ধরে। জুন ও জুলাই মাস লেবুর ভরা মৌসুম থাকে। এক একটি লেবু গাছে ৫শ থেকে ১ হাজার লেবুর ফলন হয়। উপজেলার চেচুয়া গ্রামের লেবু ব্যবসায়ী আবুল কাশেম, আব্দুর রহিম জানান, এ বছর লেবুর ব্যবসা খুব খারাপ যাচ্ছে। তারা লেবু বাগানে মালিকের কাছ থেকে প্রতিটি লেবু ৫০-৭৫ পয়সা দরে ক্রয় করেছে। এ বছর স্থানীয় বাজরেও চাহিদা নেই লেবুর।
এলাকার হাট-বাজারে ছোট লেবু ১ টাকা ও বড় লেবু ২টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। মটবাটি গ্রামের লেবু বাগান মালিক আব্দুল করিম বলেন, এ বছর লেবুর চাহিদা নেই, দামও কম। গাছের লেবু হলুদ হয়ে ঝরে পড়ছে।তা ছাড়া এ বছর বারোমাসি লেবুও প্রচুর পরিমানে ধরেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, পাইকগাছা উপকূলের এ এলাকা লবণাক্ত হওয়ায় ৩/৪টি ইউনিয়নে কাগুজি লেবু আবাদ হয়। কাগজি লেবু লাভ জনক হওয়ায় ক্ষেতের আইলের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভিত্তিকে লেবু বাগান তৈরী শুরু হয়েছে।
লেবু বাগান লাগাতে তেমন কোন খরচ হয় না, সামান্য পরিচর্যা করলে লেবু বাগান থেকে প্রচুর ফলন পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে কৃষি অফিস থেকে লেবু বাগান তৈরী করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।