শখের বসে চুইগাছ লাগিয়ে তা লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার মহিউল ফারুক বুলবুল (৫০) নামের এক কৃষক।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বুলবুলের ছেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চুইগাছের একটি ছবি পোস্ট করেন। পোস্টে গাছটির দাম নির্ধারণ করে দেন এক লাখ ১৫ হাজার টাকা।
মুহূর্তেই পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়। গাছটি নিয়ে অনেকের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তারা এর চাষ পদ্ধতি ও চারার বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। অনেকেই গাছটি দেখতে আসছেন।
কৃষক বুলবুল কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের বানিনগর এলাকার মৃত সোবহান মিয়ার ছেলে। চার বছর আগে শখের বশে পাঁচটি চুইগাছ বাড়ির বাগানে বিভিন্ন গাছের গোড়ায় রোপণ করেন। এরমধ্যে আমগাছে লাগানো একটি চুইগাছ মঙ্গলবার এক লাখ ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। গাছটি কিনেছেন একই উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের কাঞ্চনেশ্বর গ্রামের চুই ঝালের পাইকারি ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম (৪৫)।
বিশাল আকৃতির এই চুইগাছটির গোড়ার দৈর্ঘ্য ছিল সাড়ে চার ফুট, ওজন সাড়ে ৩৮ কেজি। শিকড়ের ওজন ছিল ৬০ কেজি এবং লতার ওজন ১৪০ কেজি।
কৃষক মহিউল ফারুক বুলবুল জানান, শখের বশে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে চার বছর আগে পাঁচটি চুইগাছ এনে লাগিয়েছিলেন। এক বছর ধরেই কেনার জন্য লোক আসছে। মঙ্গলবার একটি গাছ সোয়া লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। বিষয়টি ফেসবুকে প্রকাশ পেলে অনেকেই চুইগাছের বিষয়ে জানতে তার কাছে আসছেন। তিনি আরও শতাধিক চুইগাছ লাগিয়েছেন বলে জানান।
গাছটির ক্রেতা আজিজুল ইসলাম বলেন, তিনি এলাকা থেকে চুইগাছ কিনে খুলনা, সাতক্ষীরার মহাজনের কাছে বিক্রি করেন। এই গাছটি তিনি খুলনার মোকাররম হোসেন নামের এক মহাজনের কাছে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। তিনি আরও জানান, এই চুইগাছ বিক্রি করে তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চুই লতাজাতীয় গাছ। কাণ্ড ধূসর, পাতা পানের মতো। কাণ্ড থেকে আকর্ষি বের হয়, সেই আকর্ষি মাটিতে বিশেষভাবে রোপণ করলে সেটি থেকে গাছ হয়। এর কাণ্ডটি মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
বর্তমানে প্রতি কেজি শুকনো চুইয়ের দাম এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দা সিফাত জাহান জানান, কালীগঞ্জে মূলত সুপারি বাগানে সাথি ফসল হিসেবে চুইগাছ লাগানো হয়।