চট্টগ্রাম: সীতাকুণ্ডে তিন বছর ধরে চাষ করা হচ্ছে ‘রং বিলাস’ আখ। এতে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। পৌর সদরের ফকিরহাট, মুরাদপুর, বাঁশবাড়িয়া, বারৈয়াঢালা ইউনিয়নে এবছরও আখ চাষ হয়েছে। আখ শব্দের উৎপত্তি ‘ইক্ষু’ থেকে। আখ হলো বাঁশ ও ঘাসের জাতভাই। এটি পোয়াসি পরিবারের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এর রস চিনি ও গুড় তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় ‘কুশ্যাল’।
মীরসরাই উপজেলার মিঠাছরা, বড়তাকিয়া, বারইয়ারহাট, আবুতোরাব, নিজামপুর, জোরারগঞ্জ, করেরহাট, আবুরহাট, শান্তিরহাট এলাকায় আখ চাষিরা এখন জমিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম জানান, এবছর ১৩ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় বেড়েছে এক হেক্টর। ২০৮ চায়না লাল হাইব্রিড আখ এবার বেশি চাষ হয়েছে।
চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী দিয়াকুল, চাগাচর ও শঙ্খ নদের তীরবর্তী খাগরিয়া, বৈলতলী, সাতবাড়িয়ার মোহাম্মদ খালীর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আখের চাষাবাদ হয়েছে।
চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রাণী সরকার বলেন, এ বছর উপজেলায় প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে আখ চাষাবাদ করা হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে।
চাষিরা জানান, আখ চাষের উপযোগী বেলে দো-আঁশ ও পলি দো-আঁশ মাটি। প্রতি কানিতে (৪০ শতক) খরচ গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। প্রতি কানিতে আখের সংখ্যা হয় গড়ে এক হাজার। খুচরা বাজারে বড় সাইজের লাল আখ ৭০-৮০ টাকা ও মাঝারি সাইজের আখ ৫০-৬০ টাকা ও ছোট সাইজের আখ ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চন্দনাইশের সাতবাড়িয়া মোহাম্মদখালী গ্রামের আখচাষি মো. আবদুল মালেক জানান, তিনি ৮০ শতক জমিতে আখ চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা। বাজারে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকায় আখ বিক্রি করতে পারবেন।
মীরসরাইয়ের মিঠাছরা এলাকার চাষি সিরাজ উদ্দিন বলেন, ৫ গন্ডা জমিতে আখ চাষ করেছি। দেশি আখের চেয়ে লাল আখের চাহিদা বেশি। পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতিটি লাল আখ ৪০-৫০ টাকা দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন রোগবালাই থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষকদের যথাসময়ে কৃষি অফিসের মাধ্যমে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ফলন ভাল হওয়ায় আখ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। আখ একটি অর্থকরী ফসল- যা শর্করা উৎপাদনের ৭৫ শতাংশ জোগান দেয়, পাশাপাশি এটা গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।