English

23 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

একই জমিতে বছরে চারবার ফসল উৎপাদন করে সফলতা পেয়েছে টাঙ্গাইলের ডা.শফিকুল ইসলাম

- Advertisements -

মো.নাজমুল ইসলাম,টাঙ্গাইলঃ টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ডা.শফিকুল ইসলাম কাজ করেন ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসাবে।পেশায় একজন ডা.হলেও কৃষির প্রতি তার রয়েছে অন্য রকম ভালোবাসা।তাই সব সময় কৃষিতে কিভাবে বিপ্লব ঘটিয়ে অল্প সময়ে অধিক ফসল উৎপাদন করা যায় এটা নিয়েই তার ভাবনা।

গত বছর একই জমিতে বছরে তিনবার ধান চাষ করে সফলতার পর এবছর একই জমিতে তিন বার ধান চাষ ও একবার সরিষা চাষ করে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন তিনি। নিজের ১০ বিঘা জমিতে বছরে পর্যায়ক্রমে ৪টি ফসলের আবাদ করতে পেরে দারুণ খুশি ডা.শফিকুল। আউশ মৌসুমে তিনি চাষ করেছিলেন বোরো ধানের জাত গোল্ডেন-১। ১১০ দিনেই সেই ফসল ঘরে তুলেছিলেন একর প্রতি ৪৫ মণ করে। আউশ কেটে আমনে চাষ করেছিলেন হাইব্রিড হিরা-১৯ ধান। ১০০ দিনেই আমন ফসল কেটে ঘরে তুলেছিলেন।

একর প্রতি ফলন মিলেছিলো ৪৮ মণ করে। আমন কেটে রবি মৌসুমের শুরুতেই সেই জমিতে রোপণ করেছিলেন বারি-১৪ সরিষা। মাত্র ৬০ দিনেই সেই সরিষা ঘরে তুলে আবার বোরো ধান চাষ করেছিলেন তিনি,সেখানেও বাম্পার ফলন পেয়েছেন।সরেজমিনে ডা.শফিকুলের কৃষিজমিতে গিয়ে দেখা যায়,চারপাশে যখন কৃষিক বোরো ধানের চারা লাগাতে ব্যস্ত তখন তিনি ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।আর জমির পাশেই করে রেখেছেন বোরো ধানের বীজতলা,ধান কাটা শেষ হলেই জমি প্রস্তুত করে একই জমিতে আবার লাগাবেন বোরো ধান।এভাবেই বছরে তিনবার ধান ও একবর সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছে ডা.শফিকুল।

তার জমিতে লাগানো সবগুলো ফসল উচ্চ ফলনশীল জাতের হওয়ায় এসব ফসলের ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। এলাকার কৃষকরা একই জমিতে বছরে চার ফসল আবাদ হওয়ায় বিষয়টি দেখে বেশ আশাবাদী হয়ে ওঠেছেন।এ বিষয়ে ডা.শফিকুল ইসলাম বলেন আমি কৃষক পরিবারের সন্তান ছোট বেলা থেকেই কৃষির সাথে জড়িত ছিলাম।আমি পেশায় একজন ডাক্তার হলেও সব সময় কৃষি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করি।আমাদের দেশের জনসংখ্যার তুলনায় কৃষি জমির পরিমান খুবই কম,তাই এই অল্প জমি ব্যবহার করে কিভাবে অধিক ফসল উৎপাদন করা যায় এটা নিয়েই সব সময় ভাতাম।তাই নিজের জমিতেই শ্রমিকের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে একাধিক ফসল উৎপাদন শুরু করি।এখন আমি একজন সফল কৃষি উদ্যোগক্তা।আমার মত যদি সকলেই একই জমিতে অধিক ফসল চাষ করে তবে দেশে খাদ্যের অভাব থাকবে না।স্থানিয় কৃষক হাশেম আলী বলেন, প্রথমে বিষয়টি আমার বিশ্বাস হয়নি। কিন্তু নিজের জমিতে বছরে চার ফসল করে এখন মনে হচ্ছে এটা অসম্ভব কিছু না।

এতে উৎপাদন খরচ যেমন কম হয়েছে, তেমনি ফলনও ভালো হয়েছে। পাশের জমির কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, ডা.শফিকুলের ক্ষেতের অবস্থা আমি সব সময় দেখেছি। দেখলাম আবাদের অবস্থা খুব ভালো। আগে তো কেবল বোরো আর আমন ধানই করতাম। এবার চিন্তা করছি, চলতি বোরো মৌসুম থেকে আমার ৪ একর জমিতেও বছরে চার ফসল কিভাবে করা যায় সেই ব্যবস্থা নেবো।

মধুপুর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন,আমরা সব সময় একই জমিতে কিভাবে বছরে একাধিক ফসল ফলিয়ে ফসলের নিবিড়তা, বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি।ডা.শফিকুল যেভাবে বছরে চার বার ফসল উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছে তা সত্যি প্রশংসানীয়। আমরা ডা.শফিকুলকে মডেল হিসাবে নিয়ে অন্য কৃষকদের একাধিক ফসল চাষে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন