ফাঁকা সড়কে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে গত দুই দিনে মারা গেছেন ৩১ জন। এরমধ্যে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে মারা গেছেন ৬ জন। আর বিভিন্ন জেলায় মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অনেকেই বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ঈদের ছুটিতে সারা দেশের রাস্তা-ঘাটই ফাঁকা। তাই যে যার মতো চালাচ্ছে মোটর সাইকেল। ফলে বেড়েছে দুঘর্টনার সংখ্যা। এরমধ্যে গত দুই দিনে রাজধানীতেই হয়েছে ১৭২ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। এ সব দুর্ঘটনায় আহতের মধ্যে ৩৯ জন ভর্তি আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আর পঙ্গু হাসপাতালে আছেন ৭৬ জন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরের মুল সড়কে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মমতা শিকদার (২৭) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। তিনি বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানিয়েছে তার স্বজনরা।
এই ঘটনায় আহত হন মোটরসাইকেলটির চালক জাহিদ। তিনি হাসপাতালটির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ। গুরুতর আহত জাহিদ ইউনাইটেড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর রাজধানীর ডেমরা কোনাপাড়ার বামৈর এলাকায় প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে চঞ্চল মিয়া (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ভগ্নিপতি শাহ আলমও গুরুতর আহত হন।
শুধু রাজধানী নয় রাজধানীর বাহিরের বিভিন্ন জেলাতেও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে। বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ঈদে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে চার তরুণের মৃত্যু হয়। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নিহতরা হলো— দন্ডপাল ইউনিয়নের লোহাগাড়া সুপারিতলা এলাকার বাছের আলীর ছেলে কাউসার আলী (১৬), একই এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে সাব্বির হোসেন (১৭), দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের খাঁ পাড়া এলাকার মজনু রহমানের ছেলে সাব্বির (২২) এবং একই এলাকার হজরত আলীর ছেলে বরকত (১৭)।
একই দিন খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়।
পুলিশ বলছে, ঈদের ফাঁকা সড়কে বেপরোয়া গতির কারনে এই দুর্ঘটনাগুলো হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোঃ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে বন্ধ থাকায় রাস্তাঘাট এমনিতেই ফাঁকা হয়ে যায়। এই সুযোগে মোটরসাইকেল চালকরা বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে এই দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে বলে তাদের স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে।’
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহতের বেশির ভাগই কিশোর। যাদের বয়স ২০ এর নিচ। এবং ১৫ থেকে ১৭ বছরেরই বেশি।