বেঁচে থাকার লড়াইয়ে ৫ দিন যুদ্ধ করে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন আঁখি। সড়ক দুর্ঘটনায় মা-বাবা মৃত্যুর পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (৪ জানুয়ারি) সকালে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তাদের মেয়ে আঁখি আক্তারও। আঁখি দেবীদ্বার মফিজ উদ্দিন আহাম্মেদ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর (বুধবার) কুমিল্লা নগরীতে মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে নিহত হন তার বাবা ফরিদ উদ্দিন মুন্সী (৫৫) এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান মা পেয়ারা বেগম (৪৫)। সেদিন আঁখিসহ তার বাবা-মা ও ফুফাতো ভাই (সিএনজিচালক) সহ চারজন সিএনজিযোগে দেবীদ্বার উপজেলার গজারিয়া থেকে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
আঁখির মারা হওয়ার ঘটনাটি নিশ্চিত করে তার চাচা আবু তাহের মুন্সি সাংবাদিকদের জানান, ডাক্তাররা আঁখির বাঁচার আশা আগেই ছেড়ে দিয়েছিলেন। তারপরও চেষ্টা করা হয়েছে। তার মরদেহ বাড়িতে আনা হচ্ছে। রাতেই তার বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
তিনি আরো জানান, গত বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে আঁখির ফুফাতো ভাই রাকিবুল (২৪)-এর সিএনজিতে করে তার বাবা ফরিদ উদ্দিন মুন্সীর চিকিৎসার জন্য মাসহ কুমেক হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। অসতর্কতায় সিগনাল অমান্য করে শাসনগাছা রেল ক্রসিংয়ে পৌঁছালে তাদের বহনকারী অটোরিকশাটি আটকে যায়, এরই মধ্যে মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় প্রায় ৫ শ গজ দূরে দুমড়ে-মুচড়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
এতে ফরিদ উদ্দিন মুন্সী ঘটনাস্থলে এবং তার স্ত্রী পেয়ারা বেগম ঢামেক হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। আহত অবস্থায় তাদের মেয়ে আঁখি আক্তার ও চালক ভাগ্নে রাকিবুলকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আঁখির অবস্থা সংকটাপন্ন হলে ৩ দিন আগে ঢামেকে নেওয়া হয়। সেখানে সোমবার সকালে আঁখির মৃত্যু হয়। তবে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন সিএনজিচালক রাকিবুল।