ফারহান আঞ্জুম মাফি (১৭) এ বছর এসএসসি পাস করেছেন। সম্প্রতি সে ভর্তি হয়েছে কুমিল্লা নগরীর একটি কলেজে ভর্তি হয়েছে। নাতি কলেজে ভর্তি হয়েছে, এই খুশিতে গত শনিবার রাতে নাতিকে একটি মোটরবাইক কিনে দেন দাদা। আর সেই বাইকই কাল হয়ে দাঁড়ালো।
মোটরবাইক নিয়ে রোববার সন্ধ্যায় গোমতী নদী পাড়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন মাফি। সাথে ছিলো আরো দুই বন্ধু। নতুন বাইক নিয়ে তাদের মধ্যে উল্লাসের কমতি ছিলো না। তবে সেই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন মাফি। গুরুতর আহত হয়েছে বাকি দুজন ব্ন্ধু।
সোমবার সকালে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুল রহমান জানান, ওই তরুণ মোটরসাইকেল চালানোর একপর্যায়ে রোববার রাত ৯টার দিকে কুমিল্লা সদরের বিবিরবাজার স্থলবন্দর সংলগ্ন কালাপীর মাজার শরীফের সামনের গতিরোধকে ধাক্কা খেয়ে মোটরসাইকেলটি উল্টে যায়। এতে আহত হয় তিন বন্ধু। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ফারহান আঞ্জুম মাফিকে (১৭) মৃত ঘোষণা করে।
নিহত মাফি কুমিল্লা নগরীর নজরুল অ্যাভিনিউ (কান্দিরপাড়) এলাকার বাসিন্দা কবি দীপ্র আজাদ কাজলের একমাত্র ছেলে। কবি আজাদ কুমিল্লার স্থানীয় ‘দৈনিক আমাদের কুমিল্লা’র সাহিত্য সম্পাদক। মাফি এ বছর কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড মডেল কলেজ থেকে এসএসসি পাস করে নগরীর রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলো।
আহত দুই মোটরসাইকেল আরোহী হলো- নগরীর বজ্রপুর এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে মো.রাজু (১৭) ও নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকার আমিন মিয়ার ছেলে কুমিল্লা মডার্ন স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র মো.ইফতি।
মাফির বাবা কবি দীপ্র আজাদ কাজল জানান, মাফি কলেজে ভর্তি হওয়ার খুশিতে তার ছোট দাদা আবদুর রহমান শনিবার তাকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন। রোববার সন্ধ্যায় দুই বন্ধুকে নিয়ে ছেলেটি গোমতী নদীর পারে ঘুরতে যায়। রাতে দুর্ঘটনায় ছেলেটির প্রাণই চলে গলো। তাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচবো?
ওসি শহিদুর রহমান আরও জানান, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহতের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।