English

19 C
Dhaka
শনিবার, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
- Advertisement -

ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা

- Advertisements -

বগুড়ার শেরপুরে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে এক মাদ্রাসা ছাত্রী কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছে।

রোববার (২৪ এপ্রিল) রাতে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। আত্মহননকারী ওই ছাত্রীর নাম মোছা. আদুরী খাতুন (১৪)। সে উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দি গ্রামের আবু হানিফের মেয়ে। আদুরী স্থানীয় খামারকান্দি বালিকা দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্রী।

অভিযোগে জানা যায়, একই ইউনিয়ন ও গ্রামের বাসিন্দা এন্তাজ আলীর  বখাটে ছেলে আবু মুছা (২০)। পেশায় একজন চা বিক্রেতা হলেও ভিডিও-এডিটিংয়ে বেশ দক্ষ ছিল সে। এই কারণে মুছা মাল্টিমিডিয়া নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) একটি আইডিও রয়েছে তার।

আর সেই আইডি ব্যবহার করে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে প্রেমের সম্পর্র্ক গড়তে বাধ্য করে বখাটে মুছা। একপর্যায়ে তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কও গড়ে তোলা হয়। পরে বিষয়টি উভয় পরিবারে জানাজানি হলে এই কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয় বখাটে মুছাকে। এরপরও বিয়ের জন্য আদুরীকে গোপনে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে সে। কিন্তু আদুরীর পরিবার রাজী না থাকায় তাকে ভিন্নপথ বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেয় বখাটে মুছা। এমনকি পরিকল্পনা অনুযায়ী বাজার থেকে কীটনাশক এনে দেওয়া হয় তাকে।

পরবর্তীতে ১৭ এপ্রিল রাত দশটার দিকে নিজ শয়নকক্ষে কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে আদুরী। ঘটনাটি পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঘটনার রাতেই বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাতে মারা যায় ওই মাদ্রাসা ছাত্রী।

নিহত আদুরীর মামা আব্দুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, বেশকিছুদিন ধরেই মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে তাকে উত্যক্ত করে আসছিল বখাটে মুছা। প্রতিবাদ করায় তার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এমনকি মাদ্রাসার অনুষ্ঠানের আদুরীর একটি ছবি সংগ্রহ করে সে। পরবর্তীতে সেটি এডিটিং করে অশ্লীল ছবি বানিয়ে আদুরীকে দেখানো হয়। সেইসঙ্গে ওই বখাটের সঙ্গে সম্পর্ক না গড়লে ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। পাশাপাশি আত্মহত্যা করতে আদুরীকে প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন নিহত মাদ্রাসা ছাত্রীর মামা আব্দুর রহিম।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া উক্ত ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। সেইসঙ্গে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে শজিমেক হাসপাতাল মর্গে নিহতের ময়না তদন্ত করা হচ্ছে। ময়না তদন্ত সম্পন্ন হলে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানান এই পুলিশ কমকর্তা।

এদিকে অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে আবু মুছার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন