বগুড়া সদর উপজেলার বারপুর ও বাশঁবাড়িয়া এলাকার বেশ কয়েকটি পয়েণ্টে জুয়ার আসর জমজমাট আকার ধারন করেছে। পুলিশের অভিযানের পরেও থামানো যাচ্ছেনা এই সমাজ ধ্বংসকারী সামাজিক ব্যাধীকে।
বরং এটি আরো দিনদিন বেড়েই চলেছে। জুয়ার টাকা পরিশোধ করতে একদিকে যেমন নিঃস্ব হচ্ছে পরিবার আর অন্য দিকে কালো টাকার পাহাড় গড়ছে দাদন ব্যবসায়ীরা। সরেজমিনে গিয়ে ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিন বিকালেই বসে জুয়ার এই রমরমা আসর। বারপুর দক্ষিনপাড়া এলাকার সাহেব আলীর ভিটা, রব্বানীর মেশিন ঘরের পিছনে, পাচঁবাড়িয়া মোড়ের সন্নিকটে গঙ্গার বাচক্যা (গঙ্গা ভিটা), সদুপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন গড়ের উপর, লালীপাড়া ব্রীজের নিকট, এসওএস স্কুলের উত্তর পার্শ্বের প্রাচীর সংলগ্ন নিচু জায়গায়, হাচেন পাগলার মাজার সংলগ্ন তালতলা ও ঘোলাগাড়ী ঈদগাহ সংলগ্ন গোতের জঙ্গল, বাঁশবাড়িয়া ঈদগাহ মাঠের পিছনে, শিকারপুর পুর্বপাড়া (কসাইপাড়া) ব্রিজের পুর্বপাশে লিচু বাগানের ভেতর হলো জুয়া খেলার অন্যতম স্পট।
এরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে জুয়া খেলতে বসে পড়ে। জুয়ার মধ্য তাস দিয়ে কাট্টি ,ডাবু অন্যতম। তবে এখন জুয়া খেলাতেও এসেছে নতুন পরিকল্পনা ও ধারা। জুয়ারুরা নিজেদের সুবিধা ও নিরাপত্তার জন্য তাসের পরিবর্তে কোথাও বা খেলে লুডু । নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গৃহিনী এই প্রতিবেদককে বলেন, “ হামার সওমী আগে ইস্কা ( রিক্সা ) চালাচ্চিলো কিন্তু জুয়ার লিশেত ( নেশায়) পড়ে একন আর
ইস্কা চালাবের যায়না। সংসারেও আর খোঁজ খবর লেইনা। যেইদিন হারে আসে সেই দিন আরো সুদের উপর ট্যাকা লিয়ে জুয়োর ট্যাকা দেওয়া লাগচিলো। ইংকে করে একন হামাকেরে বাড়িত অশান্তি আর দেনা লাগেই আচে। হামিই একন এনা বেড়ি বান্দে কোনরকমে সংসারডা টিকে থুচি”।
এরকম অনেক পরিবার আছে যারা এখন জুয়ার কাছে হার মেনে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে দেনার দায়ে গলা পর্যন্ত ডুবে গেছে। উল্লেখ্য, উপশহর পুলিশ ফাড়ীর বর্তমান ইনচার্জ দায়িত্ব পাবার পর থেকেই তার বিশেষ অভিযানের কারনে এই এলাকা থেকে অনেকটাই অপরাধ কমে গেছে। এ ব্যাপারে উপশহর পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ ইন্সপেক্টর নান্নু মিয়া’র সাথে কথা বললে তিনি জানান, “কোন অবস্থাতেই জুয়ারুদের ছাড় দেয়া হবেনা, এদের ধরতে আমাদের অভিযান চলছে। গত সপ্তাহেই আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি স্পটে আমরা অভিযান চালিয়ে জুয়া খেলার অংশ বিশেষ পুড়িয়ে দিয়েছি। জুয়ারুদের বিরুদ্ধে অভিযান আমাদের অব্যাহত থাকবে তবে আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রতিরোধের মাধ্যমেও এসব সামাজিক অপরাধ অনেকটা রোধ করা সম্ভব”।