বগুড়া পৌরসভার নির্বাচনী লড়াইয়ে হেরে গেছেন বউ-শাশুড়ি। রোববার অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে (সাধারণ ওয়ার্ড ১০, ১১ ও ১২) সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দুজনেই হেরে যান।
হেরে যাওয়া দুজন হলেন মোছা. খোদেজা বেগম ও তাঁর পুত্রবধূ মোছা. রেবেকা সুলতানা ওরফে লিমা। খোদেজা বেগম জবা ফুল ও রেবেকা সুলতানা চশমা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। বউ-শাশুড়ি দুজনই বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী মোছা. শাহিনুরের কাছে হেরে যান।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, দ্বিতল বাস প্রতীক নিয়ে কাউন্সিলর পদে বিজয়ী হয়েছেন মোছা.শাহিনুর। তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ২৭৪ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোছা. খোদেজা বেগম পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৫৬ ভোট। আর রেবেকা সুলতানা পেয়েছেন ২ হাজার ২০০ ভোট।
তিন দফায় টানা ১৭ বছর ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত পদে নারী কাউন্সিলর ছিলেন খোদেজা বেগম। এবার তাঁর বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নামেন পুত্রবধূ রেবেকা সুলতানা। ভোটের আগে খোদেজা বেগম বলে আসছিলেন, ‘ছেলের বউ প্রার্থী হলেও তাঁর নিজস্ব ভোট কমবে না। ভোটাররা চশমা পরবেন না, জবা ফুল মার্কাতে ভোট দেবেন।’ তবে এখন পরাজয়ের জন্য পুত্রবধূকেই দুষছেন খোদেজা। বলেন, পারিবারিক বিরোধে ঘরের বউ প্রার্থী হওয়ার কারণেই ১৭ বছর পর তাঁকে পরাজয়ের মালা পরতে হলো।
নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই পুত্রবধূ রেবেকা সুলতানা বলে আসছিলেন, শাশুড়ি কাছে থেকে শেখা নির্বাচনী ‘কৌশল’ কাজে লাগিয়ে তিনি এই ভোটযুদ্ধে চমক দেখাবেন। তবে শাশুড়ি-বউ দুজনের কেউই শেষ হাসি হাসতে না পারা নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
এলাকার ভোটাররা জানান, শহরের ঠনঠনিয়া দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত আশরাফ আলীর স্ত্রী খোদেজা বেগম বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে টানা ১৭ বছর কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেছেন। এবারের নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। তাঁর বড় ছেলে আলমগীর হাসান। তিনি যুবদলের কর্মী ও বগুড়া জেলা ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। মায়ের বিরুদ্ধে স্ত্রী রেবেকা সুলতানাকে প্রার্থী করেন তিনি।
আলমগীর হাসান বলেন, ‘আম্মা ১৭ বছর কাউন্সিলর ছিলেন। এখন বয়স হয়েছে। তিনি অসুস্থও। ফলে পারিবারিক বৈঠকে আম্মা ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি আর ভোট করবেন না। আমার বউকে তাঁর চেয়ারে বসাবেন। কিন্তু নির্বাচন ঘনিয়ে এলে ছোট ভাইয়ের চাপে মা প্রার্থী হয়েছিলেন। আমিও ভোটারদের চাপে পড়ে আমার স্ত্রীকে প্রার্থী করেছিলাম।’
খোদেজা বেগমের ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তাঁর মায়ের অন্য রকম জনপ্রিয়তা ছিল। মায়ের বিরুদ্ধে বড় ভাই তাঁর স্ত্রীকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় না করালে এবারও তিনি বিজয়ী হতেন।