বগুড়ায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সাতদিনের বিধি-নিষেধ দিয়েও নিয়ন্ত্রণ হয়নি করোনাভাইরাস। চলমান বিধিনিষেধ মেয়াদ শেষে শুক্রবার বিকালে আরো ৭ দিনের বিধি-নিষেধ ঘোষণা প্রদান করেছেন বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক। শনিবার প্রথম দফার সাতদিনের বিধি-নিষেধ শেষে ওই দিন থেকেই আবারো সাতদিনের বিধি-নিষেধ শুরু হবে বগুড়া পৌর ও সদর উপজেলা এলাকায়।
বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানায়, বগুড়ায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরো ৩ জন মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে ১২৪ জন। ২৯৭টি নমুনা পরীক্ষায় ১২৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪১ দশমিক ৭৫ ভাগ। একই সময়ে মোট ৩ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ জন, সরকারি মোহাম্মাদ আলী হাসসপাতালে ২ জন ও বেসরকারি টিএমএসএ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন রয়েছেন। এ নিয়ে গত ১০ দিনে সরকারি হিসেবে করোনায় মারা গেছেন ৪৩ জন। এ যাবত সরকারি হিসেবে জেলায় মোট মৃত্যু ৩৭২ জন, চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫৬৪ জন।
বগুড়ায় করোনা সংক্রমনরোধে গত ২০ জুন থেকে বগুড়া জেলা সদরে কঠোর বিধি-নিষেধ চলছে। এতে বন্ধ রয়েছে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, দোকান পাট, শপিং মলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। শুধু ওষুধের দোকান, খাবারের দোকানসহ জুরুরী সেবা বিধি-নিষেধের আওতাভুক্ত রয়েছে। অপরদিকে ওই বিধি-নিষেধের আওতায় বগুড়া পৌরসভা ও সদর উপজেলার ২৪টি হাট বাজার উন্মুক্ত স্থানে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়।
গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শহরের ফতেহ আলী, রাজা বাজার ও রেললাইন বাজার বসবে সার্কিট হাউসের মোড় হতে শুরু করে ডায়াবেটিস সমিতি ও জিলা স্কুল গেট পর্যন্ত রাস্তার পাশ দিয়ে। বকশী বাজার এমএস ক্লাব মাঠে, কলোনী বাজার মূক ও বধির স্কুল মাঠে, কালিতলা বাজার করোনেশন স্কুল মাঠে, খান্দার বাজার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম এর সামনে, গোদারপাড়া বাজার জাহিদুর রহমান মহিলা কলেজ মাঠে, কলেজ বাজার স্থানান্তরিত হয়ে সরকারি আজিজুল হক কলেজ (উচ্চ মাধ্যমিক ভবন) মাঠে, চাষী বাজার (খুচরা) নওয়াববাড়ী রোডে, সেউজগাড়ী বাজার রেলওয়ে স্টেশনের সামনে আম বাগানে বসবে। একই রকমভাবে পৌর এলাকা ও সদর উপজেলার বাজারগুলো পাশে ফাঁকা মাঠে স্থান্তরিত করার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, নতুন করে সাতদিনের বিধি-নিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম দফার সাতদিনের সময়সীমা শেষ থেকেই দ্বিতীয় দফার সাতদিনের বিধি-নিষেধ শুরু হয়ে যাবে। এছাড়া পৌর ও সদর উপজেলার সকল কাঁচাবাজার ২৬ জুনের মধ্যে উন্মুক্ত স্থানে স্থানান্তর করতে হবে এবং সকল ক্রেতা ও বিক্রেতাকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। করোনাভাইরাসজনিত রোগ এর বিস্তার রোধকল্পে সর্বাত্মক বিধি-নিষেধ যতদিন আরোপিত থাকবে ততদিন পর্যন্ত এ বিধি-নিষেধ বলবৎ থাকবে এবং এসকল নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।