বগুড়ায় করোনা পরিস্থিতি দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। প্রতিদিন বাড়ছে রোগী। বাড়ছে মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় আক্রান্ত হয়েছে ৯৮ জন। এই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ দশমিক ৭ শতাংশে ঠেকেছে। গত ৯ দিনে এখানে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আশঙ্কাজনক আক্রান্তের হার এবং মৃত্যুর পরেও বগুড়ার সাধারণ মানুষ সচেতন হচ্ছে না। বগুড়া জেলা প্রশাসন পৌর এলাকায় কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে।
সেই অনুযায়ী মার্কেটগুলো বন্ধ আছে। কিন্তু শহরে মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিক। রাস্তায় রিকশা,অটোরিক্সা নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। পুলিশের বাঁধা কিছু জায়গায় লক্ষ্য করা গেলেও খোদ সাতমাথা এলাকাতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ যানবাহন চলাচল করছে।
বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষরা করোনার ভয়াবহতা উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে আসছেন। আব্বাস আলী, আব্দুল কুদ্দুস, লাল মিয়াসহ বেশ কিছু দিনমজুরের সাথে কথা হলে তারা মানবজমিনকে জানান, ঘরে চাল নেই। কাজে বের না হলে পরিবারের লোকজন না খেয়ে থাকবে। বাধ্য হয়েই বের হতে হয়েছে। তারা আরো বলেন, সরকার লকডাউন দিয়েছে ভালোর জন্য। আমরাও সেটি মানতে চাই। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে খাবার দেবে কে? আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করলে আমরাও বের হবো না।
এদিকে ব্যাংক, বীমা অফিস, পোস্ট অফিস, মুদি দোকানগুলোতে লোকজনের সমাগম একেবারেই স্বাভাবিক। সেখানে গণ-উপস্থিতিতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হলেও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে শহরের মধ্যে ঢুকে পড়ছে।
এদিকে বগুড়ার চারমাথা বাসস্ত্যান্ডগুলো থেকে লোকাল বাস রীতিমত যাতায়াত করছে। সেখানেও মানুষের উপস্থিতি অনেকটা গাদাগাদি।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটিই জেলায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এছাড়া গেল নয়দিনে ৩৬জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মরণঘাতী এই ভাইরাস।
মারা যাওয়া ৩৬জনের মধ্যে বগুড়ার ১৪জন, নওগাঁর ৭জন, জয়পুরহাটের ১৩জন এবং গাইবান্ধা ও নাটোর জেলার একজন করে রয়েছেন। জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৩হাজার ১৫২ জন। মোট নমুনা পরীক্ষা ৮০ হাজার ৫৭ টি। মোট সুস্থ্য হয়েছেন ১২ হাজার ২৯৮ জন রোগী।
বৃহস্পতিবার এসব তথ্য নিশ্চিত করে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, এই জেলায় চিকিৎসা নেয়ার জন্য সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে প্রতিদিন রোগী আসছে। ফলে দিন দিন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে বগুড়া। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। লোকজনকে সচেতন করছি।