রাজশাহীতে বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার দংশন করে হেফজুল আলী (৪৫) নামের এক কৃষককে। আর এতে আতঙ্কিত না হয়ে ওই অবস্থায় বিষধর সাপটিকে তেড়ে ধরে পিটিয়ে মারেন এবং একে হাতে ঝুলিয়ে নিয়েই হাসপাতালে দৌড়ে পৌঁছান তিনি।
শুক্রবার (৩১ মে) সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এভাবেই সাপসহ উপস্থিত হন ওই কৃষক।
হেফজুল আলী রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের জসিম প্রামাণিকের ছেলে।
জানা যায়, আজ সকাল ৮টার দিকে পিরোজপুর গ্রামের একটি কৃষি জমিতে ধান কাটার কাজ করছিলেন হেফজুলসহ কয়েকজন কৃষক। ধান কাটার এক পর্যায়ে হঠাৎ করে একটি রাসেল ভাইপার সাপ হেফজুলের গালে ছোবল দেয়। এতে হেফজুল ভয় না পেয়ে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন।
এ সময় হেফজুল ওই সাপসহ দ্রুত চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান।
পরে সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। বেলা ১১টার দিকে তিনি মৃত রাসেল ভাইপারসহ রামেক হাসপাতালে যান। তখনও তিনি সাপটির লেজ ধরে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন হাতে। এ সময় তিনি নিজেই কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে ভর্তি হন হাসপাতালটির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে।
আর তার এই দুঃসাহসিক কাণ্ড দেখে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অনেকেই এসময় হেফজুলের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন।
হাতে করে সাপ ঝুলিয়ে হাসপাতালে আসার কারণ জানতে চাইলে আহত কৃষক হেফজুল বলেন, দংশনের পর সাপটিকে মেরে সাপসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাই। কিন্তু সেখান থেকে চিকিৎসকরা আমাকে রাজশাহী মেডিকেলে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে রামেক হাসপাতালে এসে ভর্তি হই। ধারণা ছিল, চিকিৎসকরা সাপ দেখলে দ্রুত সঠিক ওষুধ (অ্যান্টিভেনম) দিতে পারবেন।
দ্রুত সঠিক চিকিৎসা হবে এমন আশায় সাপটিকে সঙ্গে নিয়ে আসেন বলে জানান কৃষক হেফজুল।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হেফজুলের অবস্থা বর্তমানে ভালো। অনেকেই সাপে দংশনের পর কবিরাজ কিংবা ওঁঝার কাছে যান, তিনি সেটা না করে হাসপাতালে চলে এসেছেন। এটি তার সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।
এদিকে গত সপ্তাহেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাপের দংশনে চিকিৎসা নিতে আসা এক চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক রোগী মারা গেছেন। এর আগে একই উপজেলা রাসেল ভাইপারের দংশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।