চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে নিহতদের লাশ চুরি ঠেকাতে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে রড সিমেন্ট দিয়ে কবর বাঁধাই এর কাজে নেমে পড়েছে এলাকাবাসী। বজ্রপাতে কারও মৃত্যু হলে সেই মরদেহ মূল্যবান কোনো বস্তুতে পরিণত হয়। এমন ধারণা থেকে দেশে প্রায় প্রায় বজ্রপাতে নিহতদের লাশ চুরির ঘটনা ঘটে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে সেই আশঙ্কা থেকেই গ্রামবাসীর এই উদ্যোগ।
গত বুধবার (৪ আগষ্ট) চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর তেলিখাড়ি ঘাটে বজ্রপাত হলে, সদর উপজেলার সূর্য নারায়নপুর গ্রামের ১৪ জন, চরবাগডাঙ্গার একজন এবং শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের আরও দুইজন মারা যায়। তাদের প্রত্যেকের কবর বাঁধাই করতে স্বেচ্ছাই এগিয়ে আসেন গ্রামবাসী।
সূর্য নারায়নপুর গ্রামের আল মামুন চারদিন আগেই বিয়ে করেন শিবগঞ্জের দক্ষিণ পাকার সুমি খাতুনকে। বিয়ের তিনদিন পর, বুধবার কনের বাড়ি থেকে বর-কনে আনতে যাচ্ছিলো মামুনের বাবা-মা সহ নিকট আত্মীয় স্বজনরা। বেলা ১২টার দিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে পদ্মা পার হয়ে বরযাত্রীদের নৌকা শিবগঞ্জের পাঁকা নারায়ণপুর ঘাটে পৌঁছালে, শুরু হয় বজ্রপাত। ঘটনাস্থলেই বজ্রপাতে আল মামুনের পরিবারের ১৪ জনসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়।
মামুনের পিতাকে দাফন করা হয়েছে বাড়ির পেছনের দরজার পাশে। আর নানা-নানীসহ একই পরিবারের ছয়জনের দাফন সম্পন্ন করেছেন রাস্তা ঘেঁষা ঐ বাড়ির সামনের প্রধান দরজার পাশে। কিন্তু বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহগুলো দাফনের পর সংসারের চিন্তা বাদ দিয়ে কবরগুলো পাহারা দিতে হয়েছে তাকে। স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে সারাদিন চলেছে কবর বাঁধায় শেষে কবরের উপরে রড সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দেওয়ার কাজ চলেছে সন্ধ্যা পর্যন্ত। কাজ শেষ করে কিছুটা নিশ্চিত হন তারা।
নারায়নপুর ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ১৩ নং ওয়ার্ড সদস্য আজিম হোসেন জানান, সরকারের অনুদানের পাশাপাশি লাশগুলোর চুরি ঠেকাতে কবরগুলো বাঁধাই করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহায়তা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।