ক্রমাগতভাবে রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় চলমান লকডাউন আরও সাতদিন বাড়ানো হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা পরিষদ প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা শেষে এ ঘোষণা দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ।
আগামী ৭ জুন পর্যন্ত বর্ধিত লকডাউনের বিষয়টি জানিয়ে মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, জেলায় দিনদিন করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে। এজন্য লকডাউনের কোনো বিকল্প নেই।
এর আগে গত ২৪ মে সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে এক সপ্তাহের জন্য বিশেষ লকডাউন ঘোষণা দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ। এবার কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। আম কিনতে আসা ব্যাপারীদের ক্ষেত্রে এ শর্ত শিথিল করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেন, আগের ১১ দফা নির্দেশনার মধ্যে ছিল বাইরে থেকে কেউ জেলায় প্রবেশ করতে পারবে না। এ শর্ত শিথিল করা হয়েছে। ব্যাপারীরা যথাযোগ্য প্রমাণ দিয়ে জেলায় আম কিনতে আসতে পারবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবারের লকডাউন চলাকালে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকবে। তবে, রোগী পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি সেবা দানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না। কোনো প্রকার যানবাহন রাজশাহী-নওগাঁ থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রবেশ করতে পারবে না এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকেও কোনো যানবাহন জেলার বাইরে যাবে না।
সব ধরনের দোকানপাট ও সাপ্তাহিক হাট বন্ধ থাকবে। কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি দোকান ও ফার্মেসি খোলা থাকবে। তবে প্রয়োজন ছাড়া কেউ এসব স্থানে যেতে পারবে না। পৃথক পৃথক জায়গায় ছড়িয়ে আড়ৎদারের মাধ্যমে আম বিক্রয় করা যাবে। বাগান থেকে আম ট্রাকে করে পাঠানো যাবে। এ ছাড়া কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম পরিবহন চালু থাকবে। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। শিল্প-কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। তবে শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহনে আনা নেওয়া ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা যেমন কৃষি উপকরণ সার, বীজ, কীটনাশক ও কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি খাদ্যশস্য ও খাদ্য দ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান বিদ্যুৎ, পানি, ফায়ার সার্ভিস, স্থলবন্দরের কার্যক্রম টেলিফোন, ইন্টারনেট, সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমকর্মীদের সরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ডাকসেবাসহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস সমূহ তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞা আওতা বহির্ভূত থাকবে।
কার্ড প্রদান সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে। খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয় সরবরাহ করা যাবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুমার নামাজসহ প্রতি ওয়াক্তে নামাজে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পারবেন। অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সমসংখ্যক ব্যক্তি উপাসনা করতে পারবেন।
জেলা পরিষদ প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় পুলিশ সুপার এ এইচ এম আব্দুর রকিব, সিভিল সার্জন ডাক্তার জাহিদ নজরুল চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাকিউল ইসলাম, সদর হাসপাতালের আর এম ও ডাক্তার জাহাঙ্গীর কবিরসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।