প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে তিন জনের করোনা পজিটিভ ছিল, বাকিরা করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার (০৮) সকালে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘মারা যাওয়া আট জনের মধ্যে চার জনের বাড়ি রাজশাহীতে। এ ছাড়া, একজন পাবনার ও তিন জন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। তিন জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। তাদের দুই জনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে ও একজনের বাড়ি রাজশাহীতে।’
গত ২৪ মে থেকে ৮ জুন পর্যন্ত ১৬ দিনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও আইসিউতে এই নিয়ে মারা গেলেন ১১৭ জন। এর মধ্যে গত ২৪ মে ১০ জন, ২৫ মে ৪ জন, ২৬ মে ৪ জন, ২৭ মে ৪ জন, ২৮ মে ৯ জন, ২৯ মে ২ জন, ৩০ মে ১২ জন, ৩১ মে ৪ জন, ১ জুন ৭ জন, ২ জুন ৭ জন, ৩ জুন ৯ জন, ৪ জুন সর্বোচ্চ ১৬ জন, ৫ জুন ৮ জন, ৬ জুন ৬ জন, ৭ জুন ৭ জন মারা গেছেন।
বর্তমানে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি আছে ২৫৭ জন। রাজশাহীর ১২৭, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১০২, নাটোরের ১১, নওগাঁর নয়, পাবনার চারজন, কুষ্টিয়ার তিন, জয়পুরহাটের একজন। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন ১৮ জন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, পরীক্ষা ও শনাক্ত বিবেচনায় রাজশাহীতে বর্তমানে করোনা সংক্রমণের হার ৪৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এ অবস্থায় হাসপাতালে প্রতিদিন করোনার রোগী বাড়ছেই। এতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। আর নতুনভাবে রামেক হাসপাতালে সংযুক্ত করা ১৫ জন চিকিৎসকের সবাই এখনো যোগদান করেননি। তারা সবাই কাজে যোগ দিলে করোনা রোগীদের চিকিৎসা অনেকটা স্থিতিশীল হয়ে উঠবে।
এদিকে আজও রাজশাহী শহরের পাঁচটি পয়েন্টসহ সব উপজেলায় র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করা হবে। প্রতিটি স্পটে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নের্তৃত্বে স্যাম্পল কালেকশন করা হচ্ছে। রাজশাহীতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনা রোগী। প্রতিদিনই দু’টি পিসিআর ল্যাবে করোনা টেস্টের জন্য বাড়ছে নমুনার সংখ্যা। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আশঙ্কায় মহানগরের পাঁচটি পয়েন্টে বুথ স্থাপন করে ভ্রাম্যমাণ র্যাপিড করোনা টেস্ট শুরু হয়েছে।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. কাইউম তালুকদার জানান, দৈবচয়ন পদ্ধতিতে করোনা টেস্টের রেজাল্ট তাৎক্ষণিকভাবে দেওয়া হচ্ছে। এসব বুথে সোমবার (৭ জুন) ২৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮৪ জন পজিটিভ এসেছে। শতকরা হিসেবে শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এর আগে রবিবার (৬ জুন) প্রথম দিন এর হার ছিল ৯ শতাংশ।