টিকটক ও লাইকি অ্যাপস কিশোর-কিশোরী এবং তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জনপ্রিয়তা পেতে তারা যা ইচ্ছা তাই করছে। জনপ্রিয়তার লোভে কখনো কখনো ছবি, দৃশ্য ও ভিডিও পোস্ট করছে এসব অ্যাপসে। কন্টেন্টে নিজেদের উপস্থাপন করছে আপত্তিকরভাবে। সেটা নিয়ে হচ্ছে তুলকালাম কাণ্ড। ভাঙছে সংসার। হতে হচ্ছে লাশ।
তেমনই এক ঘটনা ঘটেছে বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকার পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামে। টিকটক ও লাইকি অ্যাপসে ভিডিও দেওয়ায় লাশ হতে হয়েছে এক স্কুলছাত্রীকে। ওই স্কুলছাত্রীর নাম রাইসা আকতার (১৪)। নিহত রাইসা ছাবেদ আলী মেয়ে। সে ধুনট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
বৃহস্পতিবার সকালের দিকে রাইসার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ধুনট থানা থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বুধবার সন্ধ্যার দিকে শয়নকক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় রাইসা টিকটক ও লাইকিতে আসক্ত হয়ে পড়ে। জনপ্রিয়তা পেতে ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে রাইসা। সেটা তার পরিবারের লোকজনের চোখে পড়ে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে বড় বোনের সঙ্গে ঝগড়া হয় রাইসার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার বিকেলে নিজ বাড়ির শয়নকক্ষে দরজা লাগিয়ে দেয় সে। পরে সন্ধ্যার দিকে পরিবারের লোকজন ঘরে ঢুকে রাইসার দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ রাইসার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ছাবেদ আলী বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জহুরুল ইসলাম জানান, রাইসাকে চিকিৎসার কোনো সুযোগ পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।